সৈকতের অনুসারীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ, ঢাকা কলেজে বিক্ষোভ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় বিচার দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীরা এ মারধরে জড়িত বলে দাবি করে বিক্ষোভকারীরা।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে তারা। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মিরপুর সড়কে বের হয়ে সাইন্স ল্যাবরেটরি মোড় ঘুরে পুনরায় ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়।
এ সময় কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মিছিলে অংশ নেওয়া ছাত্রলীগ নেতা শেখ মিথুন বলেন, রাত তিনটার দিকে অনাকাঙ্খিতভাবে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুই জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আক্রমণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীরাও ছিলো। এমন ঘটনার প্রতিবাদে আমরা রাজপথে নেমেছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের খুঁজে বের করতে হবে।
ছাত্রলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম কোতোয়াল বলেন, পরিকল্পিতভাবে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুইজন নিবেদিত প্রাণ মানুষের উপর হামলা চালিয়েছে। সেসব সন্ত্রাসীদের এমন কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা চাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করবে।
এই ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি করে বক্তারা বলেন, অন্যথায় কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আবারও রাজপথে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেয়।
এরআগে, বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩ টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার এলাকায় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুই নেতার উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আহতরা হলেন কাওসার হোসান কায়েস এবং সাব্বির হোসাইন। আহত দুজনকে তাৎক্ষণিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে সাব্বির আহমেদ কে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছুটি দেওয়া হলেও গুরুতর আহত কাওসার হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ধানমন্ডি পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে কাউসারের মাথায়, চোখে, হাতে, জখমের আর সাব্বিরের মাথায়, ঘাড়ে ও হাতে জখম হয়েছে৷
এই ঘটনার পরপরই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহতদের দেখতে আসেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান।
কারা হামলা করেছে এবিষয় জানতে চাইলে সাংবাদিকদের ইনান বলেন, বিষয়টি আমরা প্রাথমিকভাবে বলতে পারছি না এটি সকালে খতিয়ে দেখব এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও অবগত করব যেন সন্ত্রাসী হামলাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে পারেন। একইসাথে ছাত্রলীগের কেউ এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ ছাত্রলীগকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের অধীনে নিয়ে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক ইনান বলেন, এটি একটি সাংগঠনিক বিষয়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাজ হবে। গঠনতন্ত্র ছাত্রলীগের সকল নেতাকর্মীদের কাছে সংবিধান। গঠনতন্ত্রে যেভাবে ছাত্রলীগের ইউনিট সমূহের কমিটি গঠন করার কথা রয়েছে সেভাবেই কাজ করা হবে।
অপরদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডি পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। তিনিও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করার আশ্বাস দেন।