একাই তিন বেড নিয়ে থাকা রাবি ছাত্রলীগ নেত্রীর কক্ষ সিলগালা
নিয়ম ভঙ্গ করার অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী নাশরাত আর্শিয়ানা ঐশীর রুম সিলগালা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি হলের ২৮৮ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই রুম সিলগালা করা হয়। রুম সিলগালার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ফারজানা কাইয়ুম কেয়া।
তিনি হলের কোনো নিয়মকানুন মানতেন না। হলে ঢোকার সময় রাত ১০টা হলেও সে প্রতিদিন রাত ১টার পরে হলে ঢুকতো। বিষয়গুলো নিয়ে আমরা হল প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। -হল প্রশাসন
জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেত্রী ঐশী বলেন, আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর আমাদের রাবি শাখা ছাত্রলীগের ২৬তম সম্মেলন। সেখানে আমি সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী। আমি যেন পদে আসতে না পারি সেজন্য একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের ইন্ধনেই আমার রুমে সিলগালা করা হয়েছে। এছাড়াও ছাত্রলীগ করার কারণে আমাকে আমাদের হল প্রভোস্ট পছন্দ করেন না।
এ বিষয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল ছাত্রলীগের সভাপতি তাজরিন মেধা বলেন, আমি প্রথমে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। ঐশীর উচিত ছিল বিষয়টি ম্যামের সাথে বসে সমাধান করা। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি, ম্যাম ঐশীকে অনেকবার চিঠি দিয়ে দেখা করতে বললেও তিনি ম্যামকে এড়িয়ে গেছে। একটা হলের নিয়ম থাকে, তাকে সেই নিয়ম মেনেই চলতে হতো।
তিনি আরও বলেন, ঐশী মনে করেন আমি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছি। কিন্তু তার অবস্থান জানা উচিত। আমি একজন সভাপতি হয়ে তার বিরুদ্ধে কেন লাগতে যাব? এটি সম্পূর্ণ তার সাথে হল প্রশাসনের বিষয়। এছাড়াও ম্যামের বিরুদ্ধে সে যে অভিযোগ করেছে সেটাও মিথ্যা।
জানতে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ফারজানা কাইয়ুম কেয়া বলেন, আমাদের হলের রুমগুলোতে একা থাকার কোনো নিয়ম নেই। ঐশী দীর্ঘদিন ধরে তিন বেডের রুমে একা থেকে আসছিল। এই বিষয়ে তাকে অনেকবার অবহিত করা হয়েছে। অন্য শিক্ষার্থীদের অ্যালটমেন্টও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি সবাইকে ভয় দেখিয়ে উঠতে দেয়নি।
রাবি ছাত্রলীগের সম্মেলনে আমি সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী। আমি যেন পদে আসতে না পারি সেজন্য একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের ইন্ধনেই আমার রুমে সিলগালা করা হয়েছে। -নাশরাত আর্শিয়ানা ঐশী
তিনি বলেন, তিনি হলের কোনো নিয়মকানুন মানতো না। হলে ঢোকার সময় রাত ১০টা হলেও সে প্রতিদিন রাত ১টার পরে হলে ঢুকতো। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ওকে চিঠি দিয়েছিলাম। তিনি কোনো চিঠির উত্তর দেয়নি। এমনকি আমাদের সাথে দেখাও করেনি। বিষয়গুলো নিয়ে আমরা হল প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা এ বিষয়ে অবগত আছি। হল প্রশাসন যেটা ভালো মনে করেছেন সেটাই করেছেন। কেউ যদি নিয়ম না মেনে চলে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।