চবির নারকীয় তাণ্ডবে উঠে আসছে ছাত্রলীগ নেতাদের নাম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্যের বাসভবন ও পরিবহন দপ্তরের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় হাটহাজারী মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় ১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকের ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া মামলায় আরও অনেকে অজ্ঞাত আসামি রয়েছেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন।
তিনি বলেন, উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর, পরিবহন দপ্তরে ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। এতে প্রতি মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুরের মামলার অভিযুক্তরা হলেন— ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুইরেন্স বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল হোসেন আইমুন, সংস্কৃত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দীপন বণিক দীপ্ত, শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের রিয়াদ হাসান রাব্বি, ইংরেজি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নুর মোহাম্মদ মান্না, ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৌরভ ভূইয়া, পালি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম ও পদার্থবিদ্যা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম।
পরিবহন দপ্তরে ভাঙচুর মামলার অভিযুক্তরা হলেন— দর্শন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইমরান নাজির ইমন, ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আনিসুর রহমান, ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ বিভাগের শিক্ষার্থী নাসির উদ্দিন মো. সিফাত উল্লাহ, সংস্কৃত বিভাগের ২০১৮-১৯ বিভাগের অনিক দাশ, বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিরুদ্ধ বিশ্বাস এবং একই বিভাগ ও শিক্ষাবর্ষের আজিমুজ্জামান।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ভিন্নখাতে নিতে এ বীভৎস হামলা: ছাত্রলীগ
এর মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন ও আমিনুল ইসলামের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। বাকিরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে ক্যাম্পাসে পরিচিত। এর মধ্যে বগিভিক্তিক উপগ্রুপ সিক্সটি নাইনের কর্মী ৬ জন, সিএফসি উপগ্রুপের ৫ জন ও বিজয় উপগ্রুপের একজন বলে জানা গেছে।
বগিভিক্তিক উপগ্রুপ সিক্সটি নাইন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল টিপুর অনুসারী। উপগ্রুপ সিএফসি ও বিজয় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেলের অনুসারী। তবে সিএফসি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের নেতৃত্বে ও বিজয় গ্রুপ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াসের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটলে ২০-২৫ শিক্ষার্থী হতাহতের পর গত বৃহস্পতিবার রাতে ক্যাম্পাসে চলে নারকীয় তাণ্ডব। এ ঘটনায় কয়েক কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে গত শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ ও প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।