২৮ জুলাই ২০২৩, ১৭:০৫

রাজধানীতে কর্মসূচি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাসস্ট্যান্ড

  © টিডিসি ছবি

রাজধানীতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের যেকোন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করা যেন চিরায়ত নিয়মে পরিনত হয়েছে। এতে করে ক্যাম্পাসে বেড়ে যায় বহিরাগতদের আনা গোনা। এর ফলে ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্ন ঘটার পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। আর নারী শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 
 
জানা যায়, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররম প্রভৃতি এলাকায় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের যেকোন কর্মসূচি হলে ঢাকার বাইরে থাকা আসা নেতাকর্মীদের রাখা হয় ক্যাম্পাসের মল চত্বর, মুহসীন হল মাঠ, টিএসসি, কার্জন হল প্রভৃতি এলাকায়। আবার অনেক সময় ক্যাম্পাসের রাস্তায়ও এসব বাস দাঁড় করে রাখতে দেখা যায়। 

এদিকে, আজ শুক্রবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশের ডাক দেয় আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম তিন সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, আওয়ামী যুবলীগ ও আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ। এজন্য সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীরা ঢাকায় এসেছেন। আর চিরায়ত নিয়মে এসব নেতাকর্মীদের বহন করা বাস রাখা হয়েছে ঢাবি ক্যাম্পাসকেই।

রাজধানীতে ক্ষমতাসীন দলের যেকোনো কর্মসূচি হলেই হাজারো নেতাকর্মীদের আনাগোনায় স্লোগানে মুখরিত হতে থাকে ক্যাম্পাস এলাকা। ফলে শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরিতে বসে পড়াশোনা করতে বিঘ্ন ঘটে শিক্ষার্থীদের। মাঝেমধ্যে পরীক্ষা চলাকালেও সেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তাদের। আর এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা। 

আজ দুপুরের দিকে ক্যাম্পাস ‍ঘুরে দেখা গেছে, শাহবাগ থেকে টিএসসি, টিএসসি থেকে ভিসি চত্বরের এক পাশ, ভিসি চত্বর থেকে নীলক্ষেত মোড়ের দুইপাশ, ফুলার রোড, দোয়েল চত্বর থেকে বঙ্গবাজার ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ রোড পুরোটা জুড়েই শতাধিক বাস স্ট্যান্ড করে রাখা হয়েছে। এর আগেও প্রতিটি প্রোগ্রামেই এভাবে রাস্তার দুই ধারে সারি সারি বাস রাখা হয়েছিলো। 

শুধু আজই নয়। এর আগে গত ১২ জুলাই শান্তি সমাবেশ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের বার্ষিক সভা সহ প্রতিটি প্রোগ্রামেই ঢাবি ক্যাম্পাস এক অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছিলো। এতে ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সচেতন শিক্ষার্থী মহল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ক্যাম্পাসের আশেপাশে এমনকি ঢাকা শহরে যেকোনো জায়গায় সমাবেশ করলেই সকল বাস ঢাবি ক্যাম্পাসের ভেতরে রাখা হয়। ক্যাম্পাসে বেড়ে যায় বহিরাগতদের আনাগোনা। ফলে অস্বস্তিতে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশেষত মেয়েরা ভোগান্তির শিকার হন বেশি। তাছাড়া এতে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবার সম্ভাবনাও থাকে। ঢাকা শহরে এত জায়গা থাকতেও কেন ঢাবি ক্যাম্পাসেই বাস রাখার অনুমতি দিতে হবে সেই প্রশ্ন অনেক শিক্ষার্থীর।

এ প্রসঙ্গে ঢাবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, একটি নির্দেশনা চালু করতে হলে ক্যাম্পাসকে আরও কিছু বিষয় নিশ্চিত করতে হয়। তারই একটি হলো প্রবেশ পথগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া, যেমনটা আমরা ক্যান্টমেন্টগুলোতে দেখতে পাই। আমরা সেই চেষ্টা করছি যেনো বহিরাগত যান চলাচল রোধ করা যায়। তাছাড়া আমাদের সিকিউরিটি সার্ভিলেন্স বক্সের কার্যক্রম শুরু করতে পারলে আমরা এসব নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো।