২৬ জুলাই ২০২৩, ১৬:৪২

রাবি শিক্ষার্থী ইভার আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী আটক

মো. নাজমুল মাহমুদ পলাশ  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাইমা আরাবী ইভার আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী প্রধান আসামী মো. নাজমুল মাহমুদ পলাশকে (৩০) আটক করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) র‍্যাব-৫ ও র‍্যাব-১১ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন চিটাগাং রোড সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব-৫।

আটককৃত পলাশ রাজশাহী মহানগরের কর্ণহার থানার দেবেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. মুসলেম উদ্দীনের ছেলে।

র‍্যাব-৫ থেকে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিকাল সাইকোলজি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী সায়মা আরাবী ইভা তার মাস্টার্স পরীক্ষায় ৩য় স্থান অর্জন করে। গত ১৪ জানুয়ারি পারিবারিকভাবে শাওন নামের এক ব্যক্তির সাথে তার বিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হলে লক্ষীপুর এলাকার একটি পার্লারে ইভা বিয়ের সাজ করতে যায়। পার্লার থেকে ফেরার পথে আসামি (ইভার আগের প্রেমিক) নাজমুল মাহমুদ পলাশ তাকে অপহরণ করে। 

পরবর্তীতে তাকে জোর করে ঐদিন রাতেই বিয়ে করে এবং রাতেই তাকে তার বাড়িতে ফেলে রেখে যায়। ইভার পরিবার ব্যাপারটি জানতে পেরে তারা এই বিয়ে মেনে নেয় এবং আগের বিয়ে ভেঙে দেয়। কিন্তু ইভাকে আর গ্রহণ করতে রাজি হয় না আসামী পলাশ। ফলে ইভা ও তার পরিবার বিভিন্নভাবে সামাজিক হেয় প্রতিপত্রের শিকার হয়। 

মেধাবী শিক্ষার্থী ইভা এ অপমান সহ্য করতে না পেরে গত ১৯ জানুয়ারি রাতে তার বাবার হাইপার টেনশনের ওষুধ অতিমাত্রায় সেবন করে। কিছুক্ষণের মধ্যে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ জানুয়ারি ভোরে তিনি মারা যান।

পরবর্তীতে ইভার মামা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলার তদন্তভার পিবিআই-এর উপর ন্যাস্ত করলে পিবিআই তদন্ত করে ৬ জন আসামীর নামে চার্জসিট প্রদান করে। গত ৩ জুলাই রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ থেকে মোট ৬ জন আসামীর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। 

নিহত ইভার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারি পরোয়ানাপ্রাপ্ত ৬ জন আসামীর মধ্যে ৩৫ জনই আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসে ইভার পরিবারকে আরো হেয় প্রতিপন্ন করে।

উক্ত ঘটনা র‍্যাব-৫ সিপিএসসি টিমের কাছে আসার সাথে সাথে সিপিএসসি টিম তার গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। পরবর্তীতে র‍্যাব-১১, হেড কোঃ ও র‍্যাব-৫ সিপিএসসি-এর যৌথ অভিযানে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড হতে প্রধান আসামী পলাশকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।