১১ জুলাই ২০২৩, ২৩:৫৯

রেফারি জালালের বিরুদ্ধে বিতর্কিত সিদ্ধান্তের অভিযোগ

রেফারি জালাল উদ্দিন  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ত:বিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে বিতর্কিত রেফারিং করার অভিযোগ উঠেছে বাফুফের প্রথম সারির রেফারি জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে। খেলার মাঝে ডি-বক্সের বাইরে বল ক্লিয়ার করলেও গোলকিপারকে লাল কার্ড না দেখানো, খেলা শেষ হলেও অতিরিক্ত সময়ে খেলা চালনো,  অতিরিক্ত সময়ের খেলা কোন দলকেই না জানিয়ে পরিচালনা সহ খেলা চলাকালীন আরও পক্ষপাত মূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। 

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিপক্ষে খেলতে নেমে লোক প্রশাসন বিভাগ ১-০ গোলে পরাজিত হয়। কিন্তু খেলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একচেটিয়া পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্তে নাখোস লোক প্রশাসন বিভাগ।

শুধু এবছরই নয়, এর আগেও ২০২১, ২২ সালের ফুটবল টুর্নামেন্টে ফিজিক্স, আই এম এল সহ বিভিন্ন বিভাগের বিপক্ষে রেফারি জালাল বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দেন বলে অভিযোগ ছিল।

জানা যায়, খেলার ১৫ মিনিটের মাথায় যখন লোক প্রশাসন বিভাগের খেলোয়াড় আকিব হোসেন ইসলামের ইতিহাসের গোলবারে শট দিলে গোলকিপার ডি-বক্সের বাইরে এসে বল হাত দিয়ে ক্লিয়ার করেন। ফুটবলের আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে ডি-বক্সের বাইরের বল গোলকিপার হাত দিয়ে টাচ করলে তাকে লাল কার্ড দেয়া হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে রেফারি তাকে লাল কার্ড বা হলুদ কার্ড না দিয়ে শুধু হ্যান্ড বল ঘোষণা করেন। লোক প্রশাসন বিভাগের খেলোয়াড়রা লাল কার্ডের আবেদন করলেও আবেদন নাকোচ করেন তিনি।

এ বিষয়ে রেফারি জালাল বলেন, ফিফার অনেক নিয়ম রয়েছে। তারমধ্যে একটি হলো যদি কোন গোলকিপার ডি-বক্সের কাছাকাছি জায়গায় বল ক্লিয়ার করতে অনিচ্ছায় বল টাচ করে তাহলে তাকে কার্ড দেখানো যাবে না। যদি সে ইচ্ছাকৃতভাবে কিংবা দূরের বল ধরতে যেতো বা হাত দিয়ে বল ক্লিয়ার করতে যেতো তাহলে তাকে কার্ড দেখানো যেতো। যেহেতু সে কাছাকাছি অবস্থায় ছিলো এবং তার হাতে বল লাগে এজন্য আমি তাকে কার্ড দেখাইনি।

এদিকে নির্ধারিত সময় ছিল ২৫+২৫=৫০ মিনিট। নির্ধারিত সময়ে খেলা শেষ না করে রেফারি আরও ৭ মিনিট খেলা চালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ লোকপ্রশাসন বিভাগের খেলোয়াড়দের। অতিরিক্ত সময়ের ৫ম মিনিট কর্ণার কিক থেকে ইসলামের ইতিহাসের সোহাগ গোল করলে পরবর্তী দ্বিতীয় মিনিটের মাথায় শেষ বাঁশি বাজান রেফারি।

খেলা শেষে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক ও খেলোয়াড়রা অতিরিক্ত ৭ মিনিট বেশি খেলা হয়ে বলে আবেদন জানালে রেফারি জালালের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। একসময় খেলা পরিচালনা পরিষদের শিক্ষকরা এসে পরবর্তী দিন সমস্যা সমাধান করার আশ্বাস প্রদান করেন।

এ বিষয়ে রেফারি জালাল উদ্দিন ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, অতিরিক্ত সময় বা ইঞ্জুরি টাইম সব খেলাতেই থাকে। এটা ফিফার নিয়মের অন্তর্ভুক্ত। খেলার ২৭ মিনিটের দিকে যখন অতিরিক্ত সময় মাত্র ২ মিনিট তখন  ইসলামের ইতিহাস গোল দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে খেলায় দুজন খেলোয়াড় আহত হলে তাদের প্রথমিক চিকিৎসা ও প্লেয়ার পরিবর্তনের ফলে অতিরিক্ত সময় ৭ মিনিটে পৌঁছায়। 

ঢাবির ফুটবল টুর্নামেন্ট পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ঢাবির সহকারী প্রক্টর ড. এম এল পলাশ বলেন, দেখুন একটা খেলায় অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। প্রতি বছরই এমন ছোটখাটো ঝামেলা হয়। আমাদের প্রযুক্তি নেই, খালি চোখে বা যেকোনো কারণে সঠিক সিদ্ধান্ত কখনো না হতেই পারে। রেফারিরা একসাথে কয়েকটা ম্যাচ পরিচালনা করায় মাঝেমধ্যে এক দুইটা ছোটখাটো ভুল হয়ে থাকে। 

তিনি আরও বলেন, লোক প্রশাসন বিভাগের পক্ষ থেকে যদি লিখিত অভিযোগ আমরা পাই তাহলে কাল আমরা মিটিং-এ বসে দুই পক্ষের কথা শুনে একটি সিদ্ধান্ত জানানো। যদি রেফারি পক্ষপাতী আচরণ করেন তাহলে হয়তো পুনরায় খেলা হতে পারে বা সিদ্ধান্ত সঠিক মনে হলে ফল অপরিবর্তিত থাকতে পারে।