১১ জুলাই ২০২৩, ১৩:১৭

অ্যাম্বুলেন্স দিতে দেরি করায় ইবির মেডিকেলে ভাংচুর, ড্রাইভারকে মারধর

অভিযুক্ত রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্য  © সংগৃহীত

অ্যাম্বুলেন্স দিতে দেরি করায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) চিকিৎসা কেন্দ্রে ভাংচুর করেছে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্য। সে মাদকাসক্ত অবস্থায় এমনটি করেছে বলে দাবি মেডিকেল কর্তৃপক্ষের। 

সোমবার (১০জুলাই) দিকবাগত রাত ১২ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরও দুই অভিযুক্ত হলেন- একই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আতিক ও সালমান আজিজ। 

চিকিৎসা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ১০ টার দিকে কাব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে চিকিৎসা গ্রহণ করতে আসেন কাব্য। এ সময় কর্ত্যবরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদুর রহমান মিল্টন তাকে ইনজেকশন দেন৷ এর আধঘন্টা পর কুষ্টিয়া পাঠানোর জন্য ডাক্তারের সাথে বাকবিতণ্ডা শুরু করেন কাব্য।

ডা. মিল্টন তাকে জানান জরুরী ছাড়া অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয় না। এরপর চিকিৎসা কেন্দ্রের অফিসের চেয়ার টেবিল-চেয়ার ভাংচুর করেন। এছড়া প্রক্টরিয়াল বডিও গাড়ি ব্যবহারের অনুমতি দেয় নি। এর জেরে তারা অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার শাহিনুজ্জামানকে মারধর করেন।

এদিকে এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র পরিদর্শন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ দিলে দ্রুত সময়ের মোধ্যে ব্যবস্থা করা হবে জানান উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান। এ সময় ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ উপস্থিত ছিলেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্যাথলজি বিভাগের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর বলেন, তিনি (কাব্য) এসে দেয়ালে লাথি দেয়া ও অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন। পরে অসুস্থতার জন্য ইনজেকশন দেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তারকে কুষ্টিয়া পাঠাতে জোর করেন। এতে একটু সময় লাগায় তিনি ভাংচুর করতে থাকেন।

এ বিষয়ে এম্বুলেন্স ড্রাইভার মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান বলেন, আমাকে সে (কাব্য) ফোন দিয়ে গাড়ি নিয়ে যেতে বলে। পরিচয় জানতে চাইলে হুমকি দিতে থাকে। পরে খোঁজাখুঁজি করে তাকে ক্যাম্পাসের বাইরে বিএম ছাত্রাবাসের পাশে ঘাসে শুয়ে থাকা অবস্থায় পাই। এ অবস্থায় তাকে মেডিকেলে নিয়ে আসার পর ডাক্তার তাকে ইঞ্জেকশন দেন। কিন্ত সেবা দেয়ার পর কেন্দ্রেই বসে থাকেন ও কুষ্টিয়া যেতে চান। কিন্তু প্রক্টরিয়াল বডির অনুমতি না দেয়ায় আমি গাড়ি দিতে রাজি না হলে আমাকে শার্টে ধরে মারধর করেন।
 
এ বিষয়ে চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সকালে এসে জরুরি বিভাগে সকল কিছু ভাংচুর অবস্থায় পেয়েছি। পরে যোগাযোগ করে দ্রুত প্রশাসনকে জানিয়েছি। এতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেন আজাদ এবং রেজিস্ট্রার ভারপ্রাপ্ত এইচ এম আলী হাসান পরিদর্শনে আসেন। গতকাল রাতের ঘটনায় কর্তব্যরত ডাক্তারসহ যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের বক্তব্য নিয়ে আজ লিখিত অভিযোগ দিব। তাছাড়া এখন পুলিশ তদন্ত করছে এবং এর একটি সুষ্ঠু বিচার আমি দাবি করছি।

উল্লেখ, এর আগে টাকা ছিনতাই ও দেশীয় অস্ত্র বহনের অভিযোগে অভিযুক্ত কাব্যের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। তাছাড়া  বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্ত্রসহ আটক হওয়ার পর সাময়িক বহিস্কার করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিকিউরিটি ইনচার্জ আব্দুস সালাম সেলিমের সাথে খারাপ আচরণ ও গলায় ছুরি ধরারও অভিযোগ রয়েছে।