বাড়ি না ফেরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করল উত্তরণ-চবি

  © টিডিসি ছবি

কেউ আর্থিক টানাপোড়নে বাড়ি যেতে পারেনি, কেউ পরীক্ষার ব্যস্ততায় থেকে পরিবার ছাড়া ঈদ পালন করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ক্যাম্পাসে। ক্যাম্পাসে অবস্থান করা এসব শিক্ষার্থীদের জন্য ঈদের দিন খাবার পৌঁছে দিয়েছে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে গড়ে উঠা নন-প্রফিট সংগঠন ‘উত্তরণ-চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়’। গত বৃহস্পতিবার (২৯জুন) দুপুরে ৩৫ জন শিক্ষার্থীকে উত্তরণের সদস্যরা খাবার পৌঁছে দেয়।

উত্তরণ-চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক জাহিদ হাসান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপগুলোতে আমরা  দেখতে পাই বিভিন্ন সমস্যার কারণে ক্যাম্পাসে অবস্থানরত অনেক শিক্ষার্থী খাবার নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন। সেসব সমস্যার কথা চিন্তা করে  সিদ্ধান্ত নিলাম উত্তরণ থেকে কিছু একটা করার, ঈদটা তাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার। পরে আমরা উত্তরণের সদস্যরা বাজার করে, নিজেরাই রান্না করে সারা ক্যাম্পাস ঘুরে ৩৫ জন শিক্ষার্থীকে খাবার পৌঁছে দেয়। 

উত্তরণের এমন কার্যক্রম নিয়ে সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা ও যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা জানার পর আমরা তাদের একবেলা খাবার পৌছে দিয়ে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। উত্তরণের পেইজ থেকে বলা হয়েছিল যারা নানান সমস্যার কারণে ক্যাম্পাসে রয়ে গেছে তারা যেন পেজে নক করে। নাম, পরিচয় গোপন রেখে তাদের ঈদ শুভেচ্ছা পৌছিয়ে দেওয়া হবে। আমরা প্রায় ৩৫ জনের নামের তালিকা পেয়েছি। মজার ব্যাপার হলো শিক্ষার্থীরা ঈদ শুভেচ্ছা পেয়ে অনেক খুশি হয়েছে তা পরে পেজে মেসেজ দিয়ে আমাদের জানিয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, উত্তরণ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংকট উত্তরণে কাজ করছে। আমরা শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে উত্তরণ টিউশন সেবা চালু করেছি। সামনে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাউন্সিলিং সেবা করবো। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীবান্ধব কার্যক্রমগুলো আরও বিকশিত হোক। সব জায়গায় ছড়িয়ে যাক।

‘শিক্ষায় ক্ষুধা না হোক প্রতিবন্ধকতা’ এই শ্লোগান নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে উত্তরণ-চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। মূলত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষার্থী আর্থিক সংকটের কারণে অনাহারে বা অর্ধাহারে থাকেন সেসব শিক্ষার্থীদের ক্ষুধা নিবারণে এই উদ্যোগ নেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েরই তিন শিক্ষার্থী- সাংবাদিক ও যোগাযোগ বিভাগের নুর নবী রবিন ও জাহিদ হাসান এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাহমুদুল হাসান মারুফ। পরে এই কার্যক্রমে হাত বাড়িয়ে দেয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। 

হলে খাবার খেয়ে নির্দিষ্ট একটি ডাইরিতে নাম, পরিচয় লিখে খাবার খেতে পারেন শিক্ষার্থীরা। মাস শেষে নাম, পরিচয় গোপন রেখে তাদের অর্থ পরিশোধ করে দেয় উত্তরণ। প্রথম দিকে শুধু মাত্র আলাওল হলে এই সেবা চালু থাকলেও পরবর্তীতে ছেলেদের সোহরাওয়ার্দী হল, মেয়েদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়া হল, প্রীতিলতা হল সহ চারটি আবাসিক হলে বর্তমানে এই সেবা চালু আছে।


সর্বশেষ সংবাদ