১৯ জুন ২০২৩, ১৪:২৪

ঢাবিতে বাজেটের আকার কমেছে, বাড়েনি গবেষণা বরাদ্দও

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৯১৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকার বাজেট বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে উপস্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট। অথচ ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য সিন্ডিকেট ৯২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন করেছিলো। সেই হিসাবে নতুন অর্থবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট প্রায় ১১ কোটি টাকা কমতে যাচ্ছে। 

এছাড়া নতুন এই বাজেটে বাড়ছে না গবেষণা খাতেও বরাদ্দ। এ খাতে মাত্র ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া  হয়েছে। যা গত ২০২২-২৩ অর্থবছরেও একই ছিল। শতকরা হিসেবে যা মোট বাজেটের ১.৬৪ শতাংশ। 

আগামী বুধবার (২১ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের বার্ষিক অধিবেশন বসবে। সেখানে আলোচনা পর্যালোচনার পর নতুন অর্থবছরের বাজেট ও চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানা যায়। 

বাজেট হ্রাস প্রসঙ্গে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বাজেট আকারে কম মনে হলেও বাস্তবিক পক্ষে অনেক বেশি। এর কারণ হলো আমাদের প্রতি বছর আলাদাভাবে পেনশনের জন্য আলাদা বরাদ্দ দেয়া হয়। পেনশন বাজেট মূলত আপেক্ষিক, এজন্য সেটা প্রতি বছর কমবেশি হয়ে থাকে। এবার পেনশন বাজেট তুলনামূলক কম হওয়ায় পূর্ণ বাজেটের আকার ছট মনে হচ্ছে। 

গবেষণায় বাজেট বরাদ্দ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমাদের প্রতিবছর গবেষণায় বাজেট বাড়ানো উচিত। কিন্তু এটা আমরা বিভিন্ন কারণে পারিনি এ বছর। তবে সেটা কমেনি আগের বছরের মতই অভিন্ন রয়েছে।

এদিকে সিন্ডিকেট সূত্রে জানা যায়, আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রায় ৯১৪ কোটি টাকা প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন হিসেবে মোট বাজেটের ৩০ দশমিক ৬৩ শতাংশ, ভাতা হিসেবে ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ এবং পেনশন বাবদ ১৪.৬২ শতাংশ ব্যয় ধরা হয়েছে। অন্যদিকে গবেষণায় মাত্র ১.৬৪ শতাংশ। 

আরও পড়ুন: ঢাবির প্রযুক্তি ইউনিটের ফলাফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন শুরু

সূত্র আরও জানায়, নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত ৯১৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকার বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছ থেকে অনুদান হিসেবে ৭৬৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব খাতগুলো থেকে ৮৫ কোটি টাকা আয় ধরা হয়েছে। অর্থাৎ বাজেটে ৬০ কোটি টাকার বেশি ঘাটতি থাকবে। গত বছর ইউজিসির বরাদ্দ ছিল ৭৮১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, যা পরে সংশোধিত হয়ে ৭৩৮ কোটিতে নেমে আসে। 

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদের দাবি প্রকৃতপক্ষে বাজেটের আকার কমেনি। গত অর্থবছরে পেনশন বাবদ সংশোধিত বাজেট ছিল ১৯০ কোটি টাকা, এবার তা নেমে এসেছে ১৩৩ কোটিতে। অর্থাৎ প্রায় ৬০ কোটি টাকা কমেছে। পেনশন ও অবসর সুবিধা নির্দিষ্ট থাকে। একেক বছর একেক সংখ্যা।

তিনি বলেন, ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়কে যে বাজেট বরাদ্দ দেয় তা পর্যাপ্ত নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো লাভজনক প্রতিষ্ঠান নয়। এই বাজেট থেকে বেতন, ভাতা, সেবা খাতে সমন্বয় কর‍তে গিয়ে গবেষণা খাতে বরাদ্দ আর বাড়ানো যায় না।