প্লাস্টিকের ব্যবহার হ্রাস করতে হবে: চবি উপ-উপাচার্য

প্লাস্টিকের ব্যবহার হ্রাস করতে হবে
প্লাস্টিকের ব্যবহার হ্রাস করতে হবে  © সংগৃহীত

বিশ্ব পরিবেশ দিবসকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিতর্ক সংগঠন ‘ডিবেটার্স অব চিটাগং ইউনিভার্সিটি’ (ডিসিইউ) এর উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে 'জাগুক তারুণ্য, বাঁচুক পরিবেশ' শীর্ষক সেমিনার। অনুষ্ঠানে চবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন, পরিবেশ নিয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। তাই প্লাস্টিকের ব্যবহার হ্রাস করতে হবে।

রবিবার (১৮ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে আয়োজিত হয় এটি। এতে চবিতে পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতামূলক সেমিনার, মেলা, অলিম্পিয়াড ও সম্মাননা প্রদানের আয়োজন করা হয়েছে। 

এদিন সকাল ৯ টায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের মূল কার্যক্রম শুরু হয়। পরে অনুষদ মিলনায়তনে আয়োজিত হয় আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার সমাপনী পর্ব, পরিবেশ বিষয়ক সেমিনার, পরিবেশ অলিম্পিয়াড এবং দিনব্যাপী অনুষদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত হয় পরিবেশ মেলা।

এতে পরিবেশ বিষয়ক সেমিনার আয়োজিত হয়। এতে চবির ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পাল মূখ্য আলোচক হিসেবে বিজ্ঞানভিত্তিক আলোচনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আজ চারদিকে প্লাস্টিকের পাহাড়। মফস্বলের নদী খাল, নালা প্লাস্টিকে ভর্তি হচ্ছে। দেশে প্লাস্টিকের একক ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন চবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে। তিনি বলেন, ‘প্লাস্টিক বর্তমানে পারমানবিক বোমার চেয়েও ধ্বংসাত্মক। প্লাস্টিককে কিভাবে ডিকম্পোজড করা যায় সেটা নিয়ে বিজ্ঞানীদের কাজ করতে হবে। আর প্লাস্টিকের ব্যবহার হ্রাস করতে হবে।’

দেশে ৩ হাজার টন প্লাস্টিকের বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্লাস্টিকের ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। ভারত, ভিয়েতনাম, জাপানের মতো দেশে বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে প্লাস্টিক ব্যবহার হ্রাস করা হচ্ছে। তাই আমাদের উচিত প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখা।’

এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ, চবি নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোশরেকা অদিতি হক, পরিবেশ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক নাসিম ফারহানা শিরীণ, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক জনি রোজারিও। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চবি নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারিয়া মাহ্জেবীন। 

পরিবেশ মেলা:
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা তৈরি, পরিবেশ দূষণ রোধ ও সংরক্ষণে পরিবেশ মেলার আয়োজন করা হয়। পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন সংগঠন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগ সহকারে মেলায় ১৫টি স্টলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত মেলা।

আরও পড়ুন: প্যারিস রোডের সৌন্দর্য এখন স্মৃতিতে, হারাচ্ছে নান্দনিকতা

পরিবেশ অলিম্পিয়াড
পরিবেশ ও এর বিভিন্ন ইস্যু বিষয়ক পরিবেশ অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়া প্রথম ২৫ জনকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয় এবং সেরা ৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। 

পরিবেশ সম্মাননা প্রদান
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন, যারা পরিবেশ রক্ষায় এবং ক্যাম্পাসের পরিচ্ছন্নতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে তাদেরকে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং ডিবেটার্স অফ চিটাগং ইউনিভার্সিটি (ডিসিইউ) কর্তৃক ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সহায়তায় পরিবেশ সম্মাননা প্রদান করা হয়। সর্বমোট ৫ টি সংগঠনকে পুরস্কার দেওয়া হয়। তারা হলেন— চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ সংসদ, গ্রিন ভয়েজ, ক্লিন ক্যাম্পাস চিটাগং ইউনিভার্সিটি, স্নেক অ্যাওয়ারনেস, চিটাগং ইউনিভার্সিটি নেচার ক্লাব।

‘ডিবেটার্স অব চিটাগং ইউনিভার্সিটি’ (ডিসিইউ) এর আয়োজনে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, সময় টিভি ও দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকা। 

উল্লেখ্য, চবির বিতর্ক সংগঠন ‘ডিবেটার্স অব চিটাগং ইউনিভার্সিটি’ (ডিসিইউ) এর আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতায় ছিল ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ। এছাড়া সহকারী পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ছিল স্বপ্নীল ব্রাইট ফাউন্ডেশন ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী কর্মজীবী সমবায় সমিতি। 


সর্বশেষ সংবাদ