১৫ জুন ২০২৩, ১২:২০

চবিতে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে: উপাচার্য

কর্মশালায় বক্তব্য দিচ্ছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে কর্মশালা করা হয়েছে। বুধবার (১৪ জুন) ‘মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড এক্সপ্রেসিভ সাইকোথেরাপি টু প্রোটেক্ট স্টুডেন্টস ফ্রম সাবসট্যান্স অ্যাবিউজ অ্যান্ড সুইসাইড’ শীর্ষক কর্মশালা সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দে ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ড. অরুনাভ বৈরাগী। কর্মশালা পরিচালনা করেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান এর অতিথি শিক্ষক, শিক্ষাবিদ এবং থেরাপিউটিক ইমপ্রোভাইজার অধ্যাপক ড. জিম রবিনসন এবং নাট্যকলা বিভাগের খন্ডকালীন শিক্ষক, এক্সপ্রেসিভ সাইকোথেরাপিস্ট মো. মোস্তফা কামাল যাত্রা। 

উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে বলেন, সুস্থ দেহে বাস করে সুন্দর মন। মন ভালো না থাকলে লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটে। মানসিক রোগ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এটির কারণে শিক্ষার্থীদের মাঝে নেতিবাচক কার্যক্রমের জন্ম নেয়। এর ফলে হতাশাগ্রস্থ হয়ে অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সুস্থ মন দরকার এবং তারজন্য নিয়মিত কাউন্সিলিং প্রয়োজন।

উপাচার্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, জীবন অনেক বড়, দুঃখ-দুর্দশা অনেক কিছুই থাকবে। যেকোন দুঃখ-বেদনা, হতাশা পরিবার-পরিজন, সহপাঠী এবং শিক্ষকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মধ্যে দিয়ে নসিক যন্ত্রণা ও হতাশা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। চবি শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সবল রাখতে চবি প্রশাসন ইতোমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। প্রতিটি অনুষদের অধীনে বিভাগসমূহের শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের  নিয়মিত কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য চবি প্রশাসন আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, অবিলম্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। উপাচার্য শিক্ষার্থীদের শৃংখলাপূর্ণ জীবন-যাপনে অনুশীলনের পরামর্শ দেন।

কর্মশালার দ্বিতীয় পর্বে উপস্থিত শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে বিভিন্ন কর্মকৌশল উপস্থাপন করা হয়। এতে মুক্ত আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

কর্মশালায় জানানো হয়, মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এক্সপ্রেসিভ সাইকোথেরাপি একটি সৃজনশীল ও স্বত:স্ফুর্ত কর্ম-কৌশল। যাতে দলগতভাবে কম সময়ে অধিক সংখ্যক ব্যাক্তির মনো-সামাজিক সমস্যা উত্তোরণে সহায়তা দেওয়া হয়। ফলে এটি আর্থিক দিক থেকে স্বল্প ব্যায়ে অংশগ্রহণমূলক অভিব্যাক্তি প্রকাশক একটি মনো-স্বাস্থ্যসেবা পদ্ধতি হিসাবে স্বীকৃত ও ব্যাপক হারে অনুশীলিত কর্ম-কৌশল।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্য যদি নিয়মিত এক্সপ্রেসিভ সাইকোথেরাপি সেশন পরিচালনা করা যায়, তবে তা স্বল্প সময়ে কম অর্থ লগ্নীতে অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীকে মনো-সামাজিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই অভিব্যাক্তিধর্মি মনোবিশ্লেষণ পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের নেতিবাচক মানসিকতা দূর করে ইতিবাচক মানসিকতার উন্মেষ ঘটাতে সহায়ক হবে। যা গুনগত মানের শিক্ষা ও শিখন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সমর্থ হবে।