পরিবেশ দূষণ এ্যাটম বোমার থেকেও ভয়াবহ: চবি উপ-উপাচার্য
পলিমারের মাধ্যমে আমাদের পরিবেশ এমন ভাবে দূষিত হচ্ছে যা এ্যাটম বোমার থেকেও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে মন্তব্য করেছনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে। চবিতে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধান’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উপ-উপাচার্য বলেন, আমাদেরকে আমাদের বিশ্বগ্রাম রক্ষা করতে হবে। পরিবেশ দূষণ এ্যাটম বোমার থেকেও ভয়াবহ। এটি আমাদের পরিবেশকে ব্যাপকভাবে দূষিত করছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পলিমারের ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। সচেতনতা ছাড়া এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব নয়। মনে রাখতে হবে প্লাস্টিক আমাদের শত্রু নয়, প্লাস্টিকের দূষণ পরিবেশের শত্রু।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুরে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ইনস্টিটিউট অব এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেরে (ইফেস্কু) আয়োজনে ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধান’ শীর্ষক সেমিনারে মুখ্য আলোচক হিসেবে ছিলেন ইফেস্কু অধ্যাপক ড. খালেদ মিজবাহুজ্জামান।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আকতার হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন সচিব ও ইফেস্কু অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি মমিনুর রশিদ আমিন, চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক।
মুখ্য আলোচক ড. খালেদ মিসবাহুজ্জামান বলেন, খাদ্য চক্রের অংশ হিসেবে আমরা প্লাস্টিক খাচ্ছি, প্লাস্টিক পান করছি। এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাসে গ্রহণও করছি। সমুদ্র ও পাহাড়েও প্লাস্টিকের আশঙ্কাজনক উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। এমনকি অ্যাভারেস্টের চূড়ায়ও প্লাস্টিক পৌঁছে গেছে। এই প্লাস্টিকের কণা একসময় আমাদের খাদ্য ও পানীয়ে যোগ হচ্ছে। যা আমাদের জন্য ভীতিকর।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। তবে তা ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এর কারণ হলো আমরা মানুষকে প্লাস্টিকের বিকল্প দিতে পারিনি। প্লাস্টিক সস্তা ও বহনযোগ্য হওয়ায় মানুষ এটাই ব্যবহার করে।
ড. খালেদ মিসবাহুজ্জামান বলেন, প্লাস্টিক দূষণ রোধের অন্যতম উপায় হচ্ছে পচনশীল বস্তু ব্যবহার করা। এছাড়া অব্যবহৃত প্লাস্টিক রিসাইক্লিং করেও দূষণ রোধ করা যায়। অর্থাৎ পরিবেশের ক্ষতি করে এমন কোনো জিনিস পরিবেশে যেতে দেওয়া যাবে না। তবে রিসাইক্লিংকে একমাত্র সমাধান না ধরে প্লাস্টিকের বিকল্প উদ্ভাবন নিয়ে ভাবতে হবে। এছাড়া বন পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে প্লাস্টিকের প্রভাব কমান যেতে পারে। যা আমাদের এসডিজির অনেকগুলো লক্ষ্য পুরনেও সাহায্য করবে।
চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, পরিবেশের সাথে আমাদের সবার সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাই আমাদের সবার দায়বদ্ধতা রয়েছে এটিকে রক্ষার ক্ষেত্রে। আমরা সব দিক থেকে প্লাস্টিকের মধ্যে বসে আছি। প্লাস্টিক আমাদের খেয়ে ফেলছে, গ্রাস করে ফেলছে।
এর আগে সকাল ১০টায় আইন অনুষদের সামনে থেকে র্যালি এবং পরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করেন ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অতিথিরা। এছাড়া দুপুর ১২টায় ইফেস্কু প্রাঙ্গণে থিমেটিক প্ল্যাকার্ড প্রতিযোগিতা ও সেমিনার শেষে বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ করা হয়।