জেলে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা শান্ত, ছাত্র মৈত্রীর প্রতিবাদ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম শান্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাকে বহিষ্কার করলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বরং জেলে বসেই দিচ্ছেন কোর্স ফাইনাল পরীক্ষা। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুর ১২টায় রাবি সংগনটির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার আলিফ প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ৮ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং ১৬ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও নাটোর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম শান্ত অন্যতম। ইতোমধ্যে তার সংগঠন তাকে বহিষ্কার করলেও বিশ্ববিদ্যাল প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে একাডেমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিচ্ছে। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটির নেতাকর্মীরা।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গতবছর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ৭ জনের নামে মামলা হলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও কোন কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়নি।
বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী রাবি শাখার সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, গত কয়েকবছর ধরে জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ্যে আসলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি জালিয়াতি বন্ধ করতে চায় তাহলে কেন প্রক্সিকাণ্ডের মূলহোতাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে পারছেন না? আমরা সন্দেহ পোষণ করি বরাবরই মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে যায়।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভর্তি জালিয়াতির সুষ্ঠু তদন্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ না নিলে ও পোষ্য কোটা বাতিল না করলে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, সে (শান্ত) জেলখানাতে আছে। সে যদি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন করে এবং মাজিস্ট্রেট যদি এই আবেদন মঞ্জুর করে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় তার পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করবে। আমরা সরাসরি তাকে পরীক্ষার হল থেকে আটক করিনি। ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তার (শান্ত) নাম এসেছে। এজন্য পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। এখন আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় আছি। তার সকল কাগজপত্র এখনও আসেনি। এগুলো আসলে তা পর্যালোচনা করে বা লিগ্যাল সেলের অধিনে নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সিকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল ইসলাম শান্তকে গত ৩০ মে নগরীর কাটাখালি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এঘটানয় গত ৪ জুন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের যৌথভাবে স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও নাটোর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং ইতিহাস বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।