জাবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে
গেস্ট রুমে না যাওয়ায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সায়েম হাসান প্রক্টর বরাবর তার অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সালাম-বরকত হলের শিক্ষার্থী।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অসুস্থতার কারণে গেস্টরুমে না যাওয়ায় গত ১৬ মে রাত ১টার দিকে হলের পলিটিক্যাল ব্লকের ২২৬ নম্বর কক্ষে নিয়ে সিনিয়ররা তাকে মারধর করে। এ ঘটনায় সে হলে থাকতে অপারগতা প্রকাশ করায় এবং জিনিসপত্র নিয়ে হল থেকে বের হয়ে যেতে চাইলে পরের দিন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে গেস্টরুমে ডেকে পাঠায়। তারা হলেন-বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কার্যকরী সদস্য তানভীর হাসান রাব্বি (সাংবাদিকতা-৪৭ ব্যাচ), আসিফ হোসেন আকাশ (বাংলা-৪৭ ব্যাচ), সহসম্পাদক মাবরুক আল ইসলাম জোয়াদ (সরকার ও রাজনীতি-৪৭ ব্যাচ) এবং তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আকিব শাহরিয়ার সিজান (আইন ও বিচার-৪৬ ব্যাচ)।
সেখানে উপস্থিত সহসভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, খন্দকার সাজ্জাদ কবির, রাতুল রায়, মাবিবুল আলম মুঠোফোনের ভিডিও ক্যামেরা অন করে শিবির, ছাত্রদলের রাজনীতি সঙ্গে জড়িত জোর করে এমন স্বীকারোক্তি নিতে চেষ্টা করেন। আকিব মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ধরেন। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয় দেওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তার পকেটে ইয়াবা বড়ি ও আগ্নেয়াস্ত্র ঢুকিয়ে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করতে চান। এ সময় তিনি চিৎকার করে হলের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে, না হয় বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করার ভয় দেখান। পরে তাকে হলের পলিটিক্যাল ব্লক থেকে কোথাও না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং নজরদারিতে রাখা হয়। ১৯ মে মাথা, কান ও হাঁটুর ব্যথা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসার কথা বলে সাভার রেডিও কলোনিতে মামার বাসায় চলে যান তিনি। পরে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগের সহসভাপতি খন্দকার রিয়াজুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, 'গেস্টরুমে না আসার জন্য ওকে ডাকা হয়নি। ওকে ডাকা হয়েছে জুনিয়র দিয়ে খাবার আনার জন্য। এটা খারাপ চর্চা। খাবার আনার জন্য তো 'সিক বয়' আছে, ছাত্রকে দিয়ে কেনো?
তিনি আরও বলেন, তাকে হল থেকে বের করার জন্য জোরজবরদস্তি করা হয়নি। বরং সে বন্ধুদেরকে নিয়ে স্বেচ্ছায় বের হচ্ছিলো। সেটা ১৬ তারিখের ঘটনা। এটা নিয়েই তার সঙ্গে কথা বলার জন্য ডাকা হয়েছিল।
ঘটনাটি হলের অভ্যন্তরীণ হওয়ায় অভিযোগটি প্রক্টর অফিস থেকে সংশ্লিষ্ট হল প্রভোস্ট বরাবর পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
শহীদ সালাম-বরকত হলের ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট মো. মাহবুবুল মোর্শেদ বলেন, 'ঘটনাটির বিষয়ে প্রক্টর অফিস থেকে অভিযোগের কপি পেয়েছি। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ইতোমধ্যে ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।