২৬ মে ২০২৩, ১৭:৩৪

ডিইউ কফি হাটে একই থালায় খাচ্ছে মানুষ ও কুকুর, স্বাস্থ্যঝুঁকির শঙ্কা

  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও সামাজিক বিজ্ঞানের অনুষদের সামনে গেলেই চোখে পড়বে ডিইউ কফি হাট (DU Coffee HUT) নামের একটি রেস্টুরেন্ট। সকাল-বিকেলের স্ন্যাকস কিংবা দুপুর-রাতের খাবার খেতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্য ও ক্যাম্পাসে আগত অনেক দর্শনার্থীদের ভরসা করতে হয় এই রেস্টুরেন্টের ওপর। রেস্টুরেন্টটির খাবারের মান নিয়ে কোন প্রশ্ন না থাকলেও খাবার পরিবেশনের পাত্র নিয়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

জানা যায়, রেস্টুরেন্টটিতে স্ন্যাকস কিংবা খাবারের জন্য যে থালা দেওয়া হয় তা কেউ খাওয়ার পর আবার কুকুরেও খাওয়ার মতো প্রতিনিয়তই একাধিক ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ একই থালায় প্রথমে মানুষ, তারপর আবার সেই থালায় খাচ্ছে কুকুর। এমন কিছু ভিডিও চিত্র দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হাতেও রয়েছে।

এ নিয়ে শিক্ষার্থীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ জন্ম দিয়েছে। রেস্টুরেন্টটিতে প্রতিনিয়তই খাবারের থালায় কুকুরে খাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটেছে বলে জানান তারা। 

শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, ডিইউ হাট রেস্টুরেন্টে প্রায়ই এরকম চিত্র দেখা যায়। এ নিয়ে রেস্টুরেন্ট পরিচালনাকারীর কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। বিষয়টি প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে অস্বস্তিকর। পাশাপাশি রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকির শঙ্কাও। তাছাড়া খাবার খাওয়ার পর পাত্রটি যথাস্থানে রাখা হলে এরকম ঘটনাগুলো এড়ানো যাবে বলে মনে করেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই বিষয়টিকে খুবই উদ্বেগজনক বলছে। তারা বলছে, এটিকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি নিয়ে আমাদের পক্ষ থেকে রেস্টুরেন্ট পরিচালনাকারীকে নোটিশ পাঠানো হবে। তারপরও যদি তারা সংশোধন না হয় তাহলে তাদেরকে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া হবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. মেহেদী ইসলাম বলেন, হরহামেশাই এ দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে রেস্টুরেন্ট পরিচালনাকারী কোন ভ্রূক্ষেপ নেই। আমরা একটু ভালো খাওয়ার আশায় বেশি দাম দিয়ে হলেও হলের বাইরে থেকে কিনে খাচ্ছি। কিন্তু যেসব থালায় খাচ্ছি, কিছুক্ষণ পর পর সেসবথালায় কুকুর মুখ দিচ্ছে। বিষয়টি সকলের জন্যই অস্বস্তিকর। প্রশাসনের উচিত দোকানগুলো স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি আমলে না নিলে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরও সচেতন হওয়ার আহবান জানাই।

আব্দুল্লাহ বিন ওয়ালিদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, কুকুরের মুখে জীবাণু থাকে এটা আমরা সবাই জানি। এরকম নোংরা থালা খাবার খাওয়ার পরে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রেস্টুরেন্ট পরিচালনাকারীদের থেকে আমার মনে হয় যারা খেয়ে থালা এভাবে নিচে রেখে যায় তারা বেশি দায়ী। খাওয়ার পরে থালা নির্দিষ্ট স্থানে রাখতে হবে। রেস্টুরেন্ট পরিচালনাকারী এবং আমাদের সকলের এ বিষয়ে সচেতনতা জরুরি বলে আমি মনে করি।

বিষয়টি নিয়ে রেস্টুরেন্টের পরিচালনাকারী মামুন রিয়াজ বলেন, আমরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করি। সেজন্য আমাদের দুটো ছেলে নিয়োজিত সেকাজে নিয়োজিত থাকে। কাস্টমারদের অসচেতনতার জন্য এরকম ঘটনা ঘটে। কাস্টমাররা খেয়ে যদি থালাটি নির্দিষ্ট জায়গা রাখে, তাহলে কুকুরের খাওয়ার সুযোগটা থাকতেছে না। অনেকে খাবার নিয়ে সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে চলে যায়। আবার কেউ কেউ সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে চলে যায়। তারা খাবার খাওয়ার সেখানেই সেগুলো রেখে আসে। তখন এরকম ঘটনা ঘটে থাকে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিষয়টি খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত। এটা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। কুকুর খাবার খাওয়া পাত্রে কেউ খেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। যেহেতু আমরা বিষয়টি জেনেছি। আমাদের পক্ষ থেকে নোটিশ পাঠানো হবে। নোটিশ পাঠানো পরেও যদি এরকম ঘটনা ঘটে। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের ব্যবসা করতে দিবে না।