ঢাবি ক্যাম্পাসে বিড়াল নিধন, ফেসবুকে নিন্দা-ক্ষোভ

রাতে মৃত ছানাগুলোর পাশে বসে আছে  ‘মা’ বিড়াল। বঙ্গবন্ধু হলের হলের পুকুর পাড় থেকে তোলা ছবি
রাতে মৃত ছানাগুলোর পাশে বসে আছে ‘মা’ বিড়াল। বঙ্গবন্ধু হলের হলের পুকুর পাড় থেকে তোলা ছবি  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে একাধিক বিড়াল হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার কয়েকটি ভিডিও এবং ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রতিবাদে এখন নিন্দার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পাশাপাশি ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আজ শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পুকুর পাড়ের জসিম উদ্দিন হল মাঠ সংলগ্ন স্থানে ৪টি বিড়াল ছানার গলা কাটা অবস্থায় পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থীরা বলছে, রাতে কেউ এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনা বিচার চান তারা।

আমিরুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী দুটি ছবি সংযুক্ত করে এ ঘটনাটি ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয় একটি গ্রুপে পোস্ট দিয়েছেন। সেখানের একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটি বিড়াল গভীর রাতে মৃত ছানাগুলোর পাশে বসে আছে। আরেকটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বিড়ালছানাগুলোর রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে আছে। 

তিনি লিখেছেন, কোথায় গেলো আজ মানবতা নামের সেই গুণটি যা মানুষকে অন্য প্রাণী থেকে আলাদা করেছে? ৪টি বিড়ালছানা জবাই করে পুকুর পাড়ে রেখে গেলো! মা বিড়ালটি এসে রাত ৪টায়ও নিজেকে সামলে নিতে পারছেনা বলে বার বার এসে তার মৃত ছানাদের পাশে অঝোরে কান্না করছে! এ কেমন সাইকো? কী অপরাধ ছিল এই নিষ্পাপ প্রাণীর?

রিফাত হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা মানুষ নামে অমানুষ তৈরি হচ্ছি প্রতিনিয়ত। সৃষ্টির সেরা জীব আমরা অথচ আমাদের ব্যবহার কি নিষ্ঠুর! কি অদ্ভুত!

কবি জসীম উদ্দিন হলের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় টিউশনে যাওয়ার পথে হলের গার্ডেনে বাচ্চাগুলোকে দেখে গিয়েছিলাম। ভেবলেছিলাম বাচ্চাগুলোকে এডপশনের জন্য কোনো গ্রুপে পোস্ট দিব। ব্যস্ততার কারণে পোস্ট দিতে পারিনি। আজকে দেখি বাচ্চাগুলোকে মেরে ফেলেছে। নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। সাথে সাথে পোস্ট দিয়ে নিরাপদ জায়গায় রেখে আসলে হয়তো এমন হতো না। তিনি হলের কর্মচারীদের জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ করেছেন। শিক্ষার্থীরা ঘটনাটি যিনি ঘটিয়েছেন তাকে খুঁজে বের করে বিচার দাবি করেছেন। 

এ বিষয়ে কবি জসীম উদ্দিন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহিন খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিড়ালছানাগুলো যে জসীমউদ্দিন হলের কিনা তা জানি না। তবে এটা একটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এ ঘটনার সাথে কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “ব্লকের সকল আবাসিক ছাত্রীদের জানানো যাচ্ছে যে, আগামী ২৮ মে বিড়াল ধরা হবে বিধায় ছাত্রীদের সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।”

তবে এর আগে বিড়াল হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ওই হলের এক ছাত্রী আজ দুপুরে মৃত একটি বিড়ালের ছবি দিয়ে ফেসবুকে লেখেন, “ওকে কোনো মেরে ফেলা হলো? ও কি ক্ষতি করেছিল? আমার হলের মতো নিষ্ঠুর হল হয়তো আর নেই। আহারে বাচ্চাটা, এতো সুস্থ আর এক্টিভ একটা বাচ্চা ছিল। কাল ওকে মেরে ফেলা হয়েছে।”


সর্বশেষ সংবাদ