মধ্যরাতে জাবি শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে আটক ২
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংলগ্ন ইসলামনগর এলাকার একটি বাসায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার (১৪ মে) দিবাগত রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাতাদের আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন, রাকিব হোসেন (২৮) ও মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ (২৮)। রাকিবের বাড়ি ঢাকায়। তার বাবার নাম মো. শাজাহান মিয়া। অপরজন মেজবাহ উদ্দিনের বাড়ি ঝালকাঠি জেলায়। তার বাবার নাম মোফাজ্জেল হোসেন খান।ভুক্তভোগী জাবির নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
এজাহার ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা জাবির বাংলা বিভাগের ৪২তম ব্যাচের নাঈমুল আলম মিশুর পরিচিতির সুবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে এসে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ইসলামনগরের ভাড়াটিয়া বাসায় অতিথি হিসেবে অবস্থান করেন। রাত বারোটার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় বিবস্ত্র করে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করে ধর্ষণের চেষ্টা করিলে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়।
ভুক্তভোগী চিৎকার করলে অভিযুক্তরা তার মুখ চেপে ধরে। তৎক্ষণাৎ মো. রাকিব হোসেন কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়। পরবর্তীতে ৯৯৯ এ কল করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্তদের আটক করে বলেও এজাহারে উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগী।
শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত রাকিব ও মেজবাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ৪২ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাইমুল আলম মিশুর অতিথি। মিশুর মাধ্যমে অভিযুক্তদের ভুক্তভোগীর সঙ্গে পরিচয় হয়। রবিবার (১৪ মে) রাতে মিশুসহ অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীর বাড়িতে অবস্থান করে। ব্যক্তিগত কাজে মিশু ঐ দিন ঢাকায় অবস্থান করেলে অভিযুক্তরা এই সুযোগে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টা করে বলে জানা যায়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, অভিযুক্তরা আমার ক্যাম্পাসের বড় ভাইয়ের বন্ধু। তার মাধ্যমে আমার তাদের সঙ্গে পরিচয় হয়। তাদের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে ক্যাম্পাসে ঘোরাফেরা ও আলাপচারিতার মাধ্যমে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। গত শুক্রবার তারা মিশু ভাইসহ আমার বাড়িতে থাকে। রবিবার মিশু ভাই ক্যাম্পাসে ছিলো না। তারা রান্না করে আমার সঙ্গে খেতে চেয়েছিলো বলে তাদের আমার বাড়িতে নিয়ে আসি। রান্নার মাঝামাঝি সময়ে আমি অসুস্থতার কারণে রেস্ট নিতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। আমার ঘুম ভাঙার পর রাকিবকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে সেখান থেকে উঠে যাই। পরবর্তীতে আমি তাদের দুজনকে আমার বাসা থেকে বের করে দিয়ে ফটকের সামনে আটকে রাখি এবং আমার বন্ধুদের ফোন দেই। তারা এসে তাদের নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: ধর্ষণচেষ্টার সময় গৃহবধূর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আ.লীগ নেতার মৃত্যু
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, গতকাল রাতে বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দুজনকে তৎক্ষনাৎ আটক করা হয়। পরবর্তীতে আজ সকালে মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১০ ধারায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। বাকি আইনি প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবাল বলেন, ঘটনার খবর শুনতে পেয়ে আমি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। পরে অভিযুক্তদের পুলিশের হাতে তুলে দেই। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে।