১১ মে ২০২৩, ২১:২৯

‘লেংটা বাবা নিপাত যাক, চবি ছাত্রলীগ মুক্তিপাক’

শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রুবেলের পদত্যাগ দাবিতে কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের পদত্যাগ দাবিতে কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন নেতাকর্মীরা। এসময় ‘লেংটা বাবা নিপাত যাক, চবি ছাত্রলীগ মুক্তিপাক’ স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকা। 

বৃহস্পতিবার (১১ মে) সন্ধ্যা সাড়ে আটটায় নেতাকর্মীরা জিরো পয়েন্ট স্মরণ চত্ত্বরে কুশপুত্তলিকা দাহন শেষে জিরো পয়েন্ট এলাকায় স্লোগান দিতে দিতে বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান করেন।

স্লোগানে তারা বলেন, ‘লেংটা বাবার গালে গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘রুবেলের গদিতে জুতা মারো একসাথে’। সভাপতি রুবেলের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী একত্রিত হয়। কর্মীদের দিয়ে পা টেপাটেপি, হলের কক্ষে উলঙ্গ হয়ে বসে থাকা এবং নারী কেলেঙ্কারিসহ অনেকগুলো অভিযোগ তুলেছে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। 

শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ইমরান হোসাইন বলেন, পরপর নারী কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন ঘটনায় রুবেল বিতর্কিত হয়েছে। জুনিয়রদের দিয়ে পা টিপানো এবং নগ্ন হয়ে রুমে মজমাস্তি করা নিয়ে ক্যাম্পাসে তার কোনো ভাবমূর্তি নেই। এমন একজন নেতার নেতৃত্বে আমরা কীভাবে থাকি?

আরও পড়ুন: চবি ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকের ‘নোংরা কাজের’ দোহাই দিয়ে এক নেতার পদত্যাগ

তিনি বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এই জটিল সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটকে বিতর্কিত করার অধিকার তিনি রাখেন না। আমরা চাই শাখা ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে। এবিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অবিলম্বে সভাপতির পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হোক।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের মতো একটি সংগঠন পরিচালনা করার মতো কোনো ভাবমূর্তি তার নেই। বিভিন্ন সময়ে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা নিয়ে তার হোয়াটসঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মুখে মুখে সেগুলো বিরাজ করছে।

প্রদীপ আরও বলেন, তার (রুবেল) আচার-আচরণে অযোগ্যতা সবসময়ই প্রকাশ পেয়েছে। তাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে গিয়েও বিভিন্ন সময় পোস্ট করতে দেখা গেছে। এমন বিতর্কিত নেতা সভাপতি পদে থাকতে পারে না। তার পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

এর আগে গতকাল বুধবার (১০ মে) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে সংগঠনটির একদল নেতাকর্মী। এ সময় তারা শাখা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটির দাবি জানান।

এদিন দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ঝুপড়ি থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি শহীদ মিনার প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে নেতাকর্মীরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি সমাপ্ত করেন।

তারও আগে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আবু সাঈদ মারজান। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে তিনি পদত্যাগ করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি ও ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে চবি ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষনণা করা হয়। পরে গত বছরের ৩১ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় পুর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।