ঢাবি ছাত্রকে চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা, বিচার চেয়ে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মিরহাজুল শিবলীকে চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি পেশ করেন।
এর আগে ৬ মার্চ রাতে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন সহযাত্রী। গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার নয়াগঞ্জ এলকার ৪১ নম্বর রেলসেতুর পাশে এ ঘটনা ঘটে। তখন শিবলীর মাথায় ১১টি সেলাই দেওয়া হয় ও সারা শরীরে মারাত্মকভাবে আহত হন।
বিক্ষোভ সমাবেশে ঢাবি শিক্ষার্থী বর্ণালী ঘোষ বর্ণ বলেন, আহত শিবলীর মাথায় ১১ টি সেলাই ও বাম হাতে সেলাই রয়েছে। সারা শরীরে বিভিন্ন স্থানে ক্ষত ও জখম রয়েছে। ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলীর হাড় ভেঙে গেছে। বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙুলের মারাত্মক আঘাত পেয়েছে। আমরা দাবি জানাচ্ছি, অপরাধীকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং শিবলী ব্যয়বহন করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
সেই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান কাঞ্চন তিন দফা দাবি ঘোষণা করেন। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে —
১) হত্যাচেষ্টাকারীদেরকে খোঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
২) ঘটনায় বাংলাদেশ রেলওেয়েকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সুনির্দিষ্ট জবাবদিহি প্রদান করতে হবে এবং ঘটনার পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৩) আহত শিক্ষার্থীর সকল চিকিৎসার দায়ভার গ্রহণ, একজন যাত্রী হিসেবে যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং ভবিষ্যতে এধরণের ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে ঢাবির শিক্ষার্থী রিফাত জাহান শাওন বলেন, আমাদের বন্ধু মিরহাজুল শিবলীকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর উপর বিগত বছর এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই। আজকে আমরা তিন দফা দাবি নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। আমরা বাংলাদেশ রেলওয়েকে আহ্বান জানাই, আমাদের তিনটি দাবি আদায়ে সহযোগিতা করুন। যদি ৪৮ ঘন্টা মধ্যে দাবি আদায় না হয়, তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানে কীভাবে দাবি আদায় করে নিতে হয়।
ঢাবি শিক্ষার্থী ইফতি শাহরিয়ার রায়হান বলেন, ঘটনার দিনে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে তাকে গিয়ে দেখি শিবলীর অবস্থা খুবই খারাপ। তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক আমাকে ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। এখন প্রধান বিষয় হলো, শিবলী একজন টিকিটধারী যাত্রী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যাদেরকে রেলের দায়িত্ব দিয়েছে, তারা কিন্তু ঠিকভাবে দায়িত্বটা পালন করছে না। আমরা বলছি, রেলওয়েকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত করে প্রেস ব্রিফিং করতে হবে। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানে কীভাবে দাবি পূরণ করতে হয়।