জাবির বন্ধ ক্যাম্পাসে বিবর্ণ বৈশাখ, ভাটা পড়েছে উৎসবে
বৈশাখ মানে উত্তাপ আর বর্ণিল উৎসবের আমেজ। চারদিকে সাজসাজ রব। এদিনে প্রতিটি বাঙালির মনকে আলোড়িত করে, করে উচ্ছ্বসিত। দিনটিকে বরণ করে নিতে দেশের উচ্চ শিক্ষা বিদ্যাপীঠগুলোতে থাকে জমকালো আয়োজন। তবে এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধ ক্যাম্পাসে ভাটা পড়েছে সেই উৎসবের আয়োজনে।
চলমান রমজান মাস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও এবারের বৈশাখ উদযাপনে ছিল না চাকচিক্য, ছিল না সেই প্রাণবন্ত আয়োজন।
তবে আনুষ্ঠানিকতার জায়গা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা ও চারুকলা বিভাগে কিছু আয়োজন থাকলেও সেই আয়োজনে আগের মতো উচ্ছ্বাস ছিল না শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মৌনি রায় বলেন, পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালীদের অস্তিত্বের কথা বলে। এই উৎসব বাঙালি জাতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে রমজানের ছুটি থাকার কারণে এবছর আয়োজন ছিল খুবই স্বল্প পরিসরে। অন্যবার পাপেট শো এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের আয়োজনে মহুয়া চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলেও এবার সেটি হয়নি। আশা করি আগামী বছর সেই চিরচেনা রূপে বরণ করতে পারবো দিনটিকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন, ‘প্রতিবছরই বাংলা বিভাগের উদ্যোগে বর্ষবরণে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আর শিক্ষার্থীরাই এই উৎসব অনুষ্ঠানের প্রাণ। এ বছর রোজার ছুটিতে শিক্ষার্থীরা বাড়ি চলে যাওয়ায় তেমন কোনও আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। গত বছর আমরা ইনডোর প্রোগ্রাম করেছিলাম। কিন্তু এ বছর রমজানের শুরু থেকে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি।
পহেলা বৈশাখের উত্তপ্ত দুপুরে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে আলাপ হয় বৈশাখী কুলা-ডালা বিক্রেতা এক ফেরিওয়ালা কুদ্দুস মিয়ার সাথে।
তিনি বলেন, প্রতিবছরই পহেলা বৈশাখে আমি এই ক্যাম্পাসে বৈশাখের হরেক রকম কুলা, ডালা, বাশি, খেলনা, পুতুল নিয়ে ফেরি করি। প্রতিবছরই অনেক মানুষ ঘুরতে আসে, বেচা-কেনাও ভালো হয়। তবে এবার রমজান মাসে মানুষ কম, বেচাকেনাও কম।
ক্যাম্পাসের বটতলার এক খাবার দোকানি মনির হোসেন বলেন, প্রতিবছর বৈশাখের এই দিনে আমাদের দোকানগুলোতে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার ধুম পড়ে যেত। অন্যরকম একটা উৎসবের আমেজে মেতে উঠতো সবাই। প্রচুর বেচাকেনা হতো। কিন্তু এবার পহেলা বৈশাখ রমজান মাসের শেষে হওয়াতে অধিকাংশ শিক্ষার্থীরাই বাড়িতে চলে গেছে। ফলে সেই আমেজ আর নাই।