অধ্যাপকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ালেন জাবি ছাত্রী, বিচার চাইলেন স্বামী
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তফা নাজমুল মানছুরের (তমাল) বিরুদ্ধে নিজ বিভাগের এক ছাত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রবিবার (৯ এপ্রিল) একই বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের সাবেক ছাত্র ও ওই ছাত্রীর স্বামী সাদ্দাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমের কাছে এ ঘটনার বিচার চেয়ে লিখিত আবেদন করেছেন।
অভিযোগপত্রে সাদ্দাম উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালে ওই বিভাগের সাবেক এক ছাত্রীর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। এর আগে, ২০১৫ সালে জাবিতে ভর্তির মাধ্যমে অধ্যাপক তমালের সাথে তার স্ত্রীর পরিচয় ঘটে। অধ্যাপক তমাল বিভিন্ন প্রজেক্টে তার স্ত্রীকে ভলান্টিয়ারের কাজে যুক্ত করার মাধ্যমে ঘনিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। এরপর অধ্যাপক তমাল বিভাগের সভাপতি থাকাকালে ২০১৯ সালে দর্শন বিভাগের বাৎসরিক বনভোজনের সময় তাদেরকে একসাথে দেখা যায়। সেসময় তারা শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, অধ্যাপক তমালকে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। অধ্যাপক তমাল সেসময় বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রলোভন দেখিয়ে তার স্বামীকে (সাদ্দাম) তালাক দেয়ার ব্যাপারে পরামর্শ দেয়। এছাড়া ক্যাম্পাসে বিভিন্ন উৎসবের সময় তাদের একসাথে দেখা গেছে। অধ্যাপক তমাল বিভিন্ন সময়ে বাসায় ডেকে নিয়ে প্রলোভনের মাধ্যমে তার সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সাদ্দাম বলেন, ২০১৯ থেকেই তিনি আমার স্ত্রীর সাথে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন। আমি একাধিকবার তাকে সতর্ক করলেও কোন লাভ হয়নি। তাই আমি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি আরও জানান, তার স্ত্রীর সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক এখনো ছিন্ন করেন নি। তবে তারা এখন আর একসাথে বসবাস করছেন না। তাদের পরিবারে কোন সন্তান-সন্ততি নেই।
তবে অভিযোগকারীর স্ত্রী জানিয়েছেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের সাথে তার সম্পর্ক একজন শিক্ষক-ছাত্রীর মত। শিক্ষকের বাসায়ও সবার সাথে তার ভালো সম্পর্ক ছিল।
তিনি বলেন, আমি স্যারের দ্বিতীয় সন্তানের মতই পরিবারের একজন ছিলাম। আমার স্বামীর সাথে বর্তমানে আমার কোন প্রকার সম্পর্ক নেই। তবুও সে আমার সাথে যাকেই দেখে তার বিরুদ্ধেই নালিশ জানায়। আমার বর্তমান কর্মস্থলের কলিগের বিরুদ্ধেও সে একই নালিশ জানিয়েছে। তার সাথে আমার বিচ্ছেদের মামলাটি আদালতে প্রক্রিয়াধীন। এই জানুয়ারিতে মামলার শুনানি আছে।
তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে অধ্যাপক ড. মোস্তফা নাজমুল মানছুর (তমাল) বলেন, বাদী অভিযোগে যে সময়ের কথা উল্লেখ করেছে সেটা ২০১৯ সালের। এতদিন আগের ঘটনা এখন নতুন করে তুলে আনার একটা মাত্র উদ্দেশ্য হলো আমাকে হেয়-প্রতিপন্ন করা। আমার ছাত্রীর সাথে আমার ভিন্ন কোন সম্পর্ক ছিল না। অভিযোগের ব্যাপারে আমি এখনো জানিনা। এ ব্যাপারে আমার কাছে এখনো কোন নোটিশ বা কিছু আসেনি।
এ ব্যাপারে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলমকে একাধিকবার চেষ্টা করেও মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।