প্রথম আলোর সংবাদটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: রাবি প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ
সম্প্রতি দৈনিক 'প্রথম আলো' পত্রিকায় প্রকাশিত একটি সংবাদকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক আখ্যা দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ। প্রথম আলোর এই সংবাদ দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে বলে মনে করেন সংগঠনটি।
রোববার (২এপ্রিল) বিকেলে সংগঠনের স্টিয়ারিং কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে একটি শিশুর ছবির সঙ্গে ভিন্ন একজনের বক্তব্য সংযোজন করে ফটোকার্ডের মাধ্যমে অত্যন্ত সুকৌশলে জনগণকে বিভ্রান্ত করে দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অপচেষ্টা করা হয়েছে। যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রচারিত ছবি ও বক্তব্যের অসামঞ্জস্যতা সাংবাদিকতার নৈতিকতা পরিপন্থি ও মূলধারার সংবাদপত্রের কাছ থেকে কখনো কাম্য নয়। পত্রিকাটির এরূপ উদ্দেশ্যমূলক সাংবাদিকতার ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। তবে, বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতির বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে অপ্রয়োজনীয় খরচ থেকে বিরত থাকতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সরকার প্রধান হিসাবে জনগণের প্রতি এই ধরনের আহ্বান জানানো সাম্প্রতিক বিশ্বে বিরল।
এতে আরো বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, আপসহীন মানসিকতা ও দূরদর্শিতায় দেশ যখন অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে, ২০৪১ সালকে যখন উন্নত দেশে রূপান্তরের লক্ষ্য নেয়া হয়েছে, ঠিক তখনই দেশি-বিদেশি একটি সঙ্ঘবদ্ধ চক্র দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিষবাষ্প ছড়িয়ে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা, গণতন্ত্রের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করা এবং বাংলাদেশের অগ্রগতিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করার চেষ্টা করছে।
স্বাধীন-সার্বভৌম দেশে সুনির্দিষ্ট আইনে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির মামলায় আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে এমনটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটি না করে দেশের বিভিন্ন মহল এবং বেশ কয়েকটি বিদেশি মিশনের যৌথ বিবৃতি তাদের পেশাগত আওতা বহির্ভূত বলে আমরা মনে করি। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের মতো জাতির মহান দিনে যারা নিজ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের এরূপ হীন প্রচেষ্টা চালায় তাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র দেশপ্রেম আছে বলে আমরা মনে করি না। আন্তর্জাতিক একটি চক্র এবং তাদের মদদপুষ্ট গণমাধ্যমের এই ধরনের অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে আরো বলা হয়েছে, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। একটি গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার অধীন সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখার বিরুদ্ধে যে অপচেষ্টা চলছে, ২৬ মার্চ প্রকাশিত প্রতিবেদন সেই ষড়যন্ত্রের অংশ বলে আমরা মনে করি।
দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার সকল সংগ্রামে দায়িত্বশীল ভূমিকার জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা আশা করি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও কূটনীতিকগণ তাদের শিষ্টাচারবহির্ভূত কোনো ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবেন। পাশাপাশি দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকগণ প্রতিবেদন তৈরী ও সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে দেশপ্রেম, সততা, বস্তুনিষ্ঠতা ও পেশাদারিত্বের স্বাক্ষর রাখবেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে অনন্য হয়ে উঠুক- এই হোক সকলের প্রত্যাশা।