শেখ হাসিনার ইকোনমিক মডেলকে বলা হয় ‘হাসিনোমিকস’: শয়ন

  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেছেন, বর্তমানে দেশরত্ম শেখ হাসিনার ইকোনোমিক্স নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টাডি হয়। শেখ হাসিনার ইকোনোমিক্সকে বলা হয় হাসিনোমিক্স।

রোববার (২ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্র মিলনায়তনে (টিএসসি) ঢাবি ছাত্রলীগের উদ্যোগে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও গ্রন্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

শয়ন বলেন, বঙ্গবন্ধু নিজের জন্মদিন উপলক্ষে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানান কিন্তু তার আগে ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশ ত্যাগের ব্যবস্থা করেন। এটি ইতিহাসে বিরল ঘটনা। বঙ্গবন্ধুর সমসাময়িক সংবাদমাধ্যম তাঁর পরিকল্পনা নষ্ট করার জন্য ভুয়া খবর ছাপিয়েছিলো। এখনও সেই ধারা অব্যাহত রেখে তাঁরা ষড়যন্ত্র করছে। নির্বাচনের সময় ফটোশপ করে এডিট করে টিপ, সিঁদুর পরিয়ে সাম্প্রদায়িকতা প্রচার করে। এখন তারা দশ টাকা দিয়ে ভুয়া খবর তৈরী করে প্রকাশ করছে। 

তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত একটা দেশকে ঢেলে সাজানোর জন্য পরিকল্পনা নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বাকশালের স্বপ্ন দেখেছিলেন। গ্রাম, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন পর্যায়ে সমবায়ের মাধ্যমে উন্নয়নের ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন। হাসিনার ইকোনমিকস মডেল হাসিনোমিক্স আজকে শেখ হাসিনার ইকোনমি নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা হয়। বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এটি। তার ইকোনমিক মডেলকে বলা হয় 'হাসিনোমিকস'।

ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের সঞ্চালনায় এই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।

ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচা বই থেকে আমরা দেখি তিনি নিজেকে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। মুজিব ভাইয়ের খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। ছোট্ট বয়সে যখন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা নিয়ে রুটিন গোছানোতে মনোযোগী তখন তিনি বিখ্যাত পত্রিকাগুলোতে চোখ বুলাতেন। যেই সময়ে কিশোররা খেলাধুলায়, আড্ডায় মেতে থাকতো সেখানে তিনি বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে যোগদান করতেন। 

তিনি আরও বলেন, একজন শিশু কিশোরের স্বপ্ন থাকে পাড়া মহল্লায় সেরা হওয়া, বড় ভাইদের সহাচার্য পাওয়া সেখানে বঙ্গবন্ধু শৈশবে বা কৈশোরে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী বা শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের সান্নিধ্য পাবার চেষ্টা করেছেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সে 'মুসলিম সেরা ধর্ম' নামে একটি সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে সেটাকে সংগঠিত করার প্রচেষ্টা করেছেন। আসুন আমরা বঙ্গবন্ধুর জীবনের আদর্শের শিক্ষাকে হৃদয়ে ধারণ করি, তার শৈশবের দূরন্তপনাকে মনে লালল করি। 

ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, জিন্নাহ যখন চেয়েছিরো উর্দু  রাষ্ট্রভাষা হবে সেটাই একসময় জনমানুষের সম্মিলিত 'না' হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু যখন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য আন্দোলন করেছিলেন, সবাই মুচলেকা দিয়ে ছাত্রত্ব ফিরে পেলেও বঙ্গবন্ধু মুলাচেকা দেননি। তিনি ছিলেন  অনড়। ফলে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছিলো। জাতিসংঘ যখন শিশুদের নিয়ে ভাবা শুরু করেনি তখন বঙ্গবন্ধু জাতীয় শিশু আইন প্রণয়ন করেন। তিনি মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত মেয়েদের বেতন ছাড়া পড়াশোনার চিন্তা করেছিলেন, যা শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করেছেন। 

এছাড়াও আলোচনা সভা শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরুষ্কার তুলে দেওয়া হয়। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, বিভিন্ন হল শাখা ছাত্রলীগসহ ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ