স্থানীয়দের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংঘাতের নেপথ্যে যা রয়েছে
দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়। তবে সম্প্রতি এ ধরনের ঘটনা বেড়েছে। শুধু তাই নয়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সংঘর্ষে জড়াচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। গত শনিবার শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় পরিণত হয়েছিল রণক্ষেত্রে। এর দু’দিন পর সোমবার ঢাকার আশুলিয়ায় স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি তিনদিন বন্ধ রাখা হয়। একইদিন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী স্থানীয় বখাটেদের হাতে মারধরের শিকার হলে সড়ক অবরোধ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।
দেশে উচ্চশিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিগত কয়েক দশকে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একাধিক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। সাধারণ মানুষের অর্থায়নে পরিচালিত এসব বিশ্ববিদ্যালয় যেমন শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার এক নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও তৈরি করেছে। দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে গড়ে উঠেছে পারস্পরিক নির্ভরশীলতার সম্পর্ক।
তবে এ নির্ভরশীলতার সম্পর্ককে ছাপিয়ে অনেক সময় আবার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি অবস্থানেও দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থী এবং স্থানীয়রা। এটি কখনো কখনো রূপ নিচ্ছে ভয়াবহ সংঘর্ষে।
এসব সংঘাতের ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মেস ভাড়া কিংবা বাস ভাড়া অথবা হোটেলে খাওয়ার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আবার রয়েছে-স্থানীয় বখাটেদের উৎপাত, ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও শ্লীলতাহানি করা, মাদক ব্যবসা ও সেবন, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাইয়ের মতো নানান ঘটনা। এর ফলে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে নেতিবাচক ধারণা। এতে বাড়ছে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষের মতো অপ্রীতিকর বিষয়।
তথ্যমতে, গত এক দশকে ঢাকার বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনা প্রায় ২০টি। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। এছাড়া ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কয়েক লাখ টাকার। গত ১১ মার্চ স্থানীয়দের সঙ্গে রাবি শিক্ষার্থীদের এবং সোমবার স্থানীয়দের সঙ্গে ইবি শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। রাবিতে সংঘর্ষে প্রায় দু’শতাধিক শিক্ষার্থী এবং ইবিতে ১০ জন আহত হয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধার অভাব এবং নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শনের কারণে এ ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এছাড়া, এসব ঘটনায় কখনোই কাউকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় না আনায়ও এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে বিচারের মুখোমুখি করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করা গেলে এ ধরনের ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদিকুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের অন্তত আত্মসম্মানবোধ থাকে। স্থানীয়রা যখন এ আত্মসম্মানে আঘাত হানে তখনই তাদের সঙ্হে মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হয়। সব স্থানীয় খারাপ এমনটা বলবো না। তবে কারও কারও আচরণ এমন যে, আমাদের তারা দয়া করে এখানে থাকতে দিয়েছেন। কিন্তু আমরাতো কারও দয়ায় নয়, নিজেদের মেধা দিয়ে এখানে পড়ার যোগ্যতা অর্জন করেছি।
এ শিক্ষার্থী আরও বলেন, সর্বশেষ ঘটনায়ও যদি স্থানীয় কেউ রাবি শিক্ষার্থীকে প্রথম আঘাত না করতো তবে এমনটা হতো না। আবার যদি এমন হতো যে, কোনো শিক্ষার্থী হেনস্তা হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করেছে, তাহলেও শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে যেত না।
রাবি শিক্ষার্থী মো. রাজু আহমেদ বলেন, স্থানীয় বহিরাগত দ্বারা আমরা রাবি শিক্ষার্থীরা মাঝে মধ্যে লাঞ্ছিত হই ও হামলার শিকার হয়ে আসছি। কিন্তু আমাদের রাবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোরালো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সে কারণে আমাদের রাবি শিক্ষার্থীরা আজ রক্তাক্ত হচ্ছে।
রাজশাহী বিনোদপুর মির্জাপুর এলাকার বাসিন্দা আরিফুর রহমানের (৩৫) সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, রাবি শিক্ষার্থীরা মাঝেমধ্যে আমাদের স্থানীয়দের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। তাঁরা বলে আমরা বিশব্বিদ্যালয়ের ছাত্র, আমাদের ক্ষমতা অনেক। অনেক শিক্ষার্থী আছে, যারা মাসের পরে মাস মেসে থাকে। কিন্তু মেস ভাড়া দিতে গড়িমসি করে। এ কারণে তাদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে স্থানীয়দের সাথে ঝামেলা হয়।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুন বলেন, বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে অশ্লীলতাসহ মাদক গ্রহণ করে। এ ছাড়া ছেলেমেয়ে টিকটক করাসহ বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালায়। তাদের নিষেধ করতে গেলে আমাদেরকে হুমকি দেয়। বাজারে গেলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন। এ সংঘর্ষ কমাতে বহিরাগত নিষিদ্ধ করতে হবে এবং ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশে নতুন নিয়ম করতে হবে।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আজমল হোসেন আকিব জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা আধিপত্য বজায় রাখতে চান স্থানীয়রা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটে স্থানীয় কিছু বখাটে প্রায় এসে ছাত্রীদের ইভটিজিং করতে দেখা যায়। তখন আমরা প্রতিবাদ করলে তারা ছড়ায়, আমরা তাদের মারধর করেছি। এতে কিছু ইন্ধনদাতা আছে, তারা এসব ছড়ায়। বলেন, স্থানীয়দের মারধর করছে ছাত্ররা। এমনভাবে গুজব ছড়ানো হলে তা বড় সংঘর্ষে রূপ নেয়।
শুধুমাত্র রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ড্যাফোডিল কিংবা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বিগত কয়েক বছরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলসংলগ্ন স্থানীয় এক খাবার দোকানি বিল্লাল হোসাইন বলেন, আমি ৩০ বছর যাবৎ এ ক্যাম্পাসে দোকান করি। আমার এতদিনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, কখনো পূর্ব শত্রুতার জেরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগতদের কোন ঝামেলা হয়নি। ঝামেলা বিশেষ করে খেলাধুলা বা দোকানে কথা কাটাকাটির মতো ছোটখাটো বিষয় নিয়েই হয়। তবে জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গেরুয়াবাসীর ঝামেলা বেশি হয়। কারণ গেরুয়ার বাসিন্দারা একটু ক্ষমতা দেখাতে চায়। তারা মনে করে, তারা স্থানীয় তারাই এখানে সব। এছাড়া অন্যান্য এলাকার সঙ্গে ঝামেলা তেমন একটা হয় না।
গেরুয়ার এক দোকানি আমির হাসান বলেন, প্রশাসন চাইলে ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী গ্রামের বহিরাগতদের সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করতে পারবে। কারণ ক্যাম্পাসের পেছনের এ অঞ্চলগুলোয় বহিরাগমনের জন্য দুটি বিকল্প রাস্তা রয়েছে। একটি গেরুয়া থেকে রেডিও কলোনি হয়ে সাভারের রাস্তা। অন্যটি দিয়ে বটতলা-পান্দুয়া বাজার থেকে সেনওয়ালিয়া হয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ওঠা যাবে। তবে এ বিকল্প রাস্তাগুলোতে জনসমাগম না থাকায় সন্ধ্যার পর অনিরাপদ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, ক্যাম্পাসের ভেতরের রাস্তা অনেক নিরাপদ এবং যাতায়াতের ভাড়াও কম। ফলে সচরাচর এ অঞ্চলের বাসিন্দারা ক্যাম্পাসের ভেতরের রাস্তাগুলো ব্যবহার করে থাকে। আবার পার্শ্ববর্তী গ্রামের কিছু খেটে খাওয়া মানুষ আছে যারা পরিত্যক্ত মাঠে তাদের গবাদি পশু চরায় এবং জঙ্গল থেকে জ্বালানি সংগ্রহ করে। এছাড়া ক্যাম্পাসের অধিকাংশ রিকশাচালক এবং খাবারসহ বিভিন্ন দোকানের কর্মচারীরা পার্শ্ববর্তী গেরুয়া ইসলামনগরের বাসিন্দা। এর মাধ্যম একদিকে ছাত্ররা উপকৃত হচ্ছে আবার স্থানীয় খেটে খাওয়া মানুষেরা কিছু মুনাফা অর্জন করতে পারছে।
জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আখতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী স্থানীয়দের সঙ্গে আমাদের একটি ভালো সম্পর্ক থাকা উচিত। আমাদের অনেক সাবেক শিক্ষার্থীরা আছেন, যারা পড়াশোনা শেষ করে ইসলাম নগরে, গেরুয়াতে বাসা ভাড়া নিয়ে পড়াশোনা করেন। ফলে তারা সেখানে বড় একটা সাপোর্ট পান। এছাড়া দিনশেষে কোন বাজারের প্রয়োজন হলে এই গেরুয়া-ইসলামনগরেই যেতে হয়। পাশাপাশি আমাদের হলগুলোর অনেক কর্মচারী এসব এলাকার। যারা আমাদের সেবা দিয়ে আসছেন। আবার তারাও বহিরাগমনের বিকল্প রাস্তা হিসেবে আমাদের ক্যাম্পাসের রাস্তা ব্যবহার করেন এবং এ ক্যম্পাসের ওপর অনেক পরিবারের উপার্জন জড়িত। তাই, আমার মনে হয় স্থানীয়দের সঙ্গে আমাদের একটি সুন্দর সহাবস্থান বাঞ্ছনীয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহমেদ আকাশ বলেন, বিগত পাঁচ বছরে আমরা চারবার স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা দেখেছি। নারী শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করা, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাঁধা দেওয়া, এসব কারণেই সংঘর্ষগুলো হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীই এখানে এসেছে পড়ালেখার উদ্দেশ্যে। নিজে থেকে কেউই চায় না কোনো ধরনের সংঘর্ষে জড়াতে। কিন্তু যখন শিক্ষার্থীদের অস্তিত্বের প্রশ্ন আসে, তখনতো আর কোনো উপায় থাকে না। আরেকটা বিষয় হলো অতীতে শিক্ষার্থী হেনস্তার ঘটনায় কোনো বিচার হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের ওপর ভরসা রাখতে পারে না। এ ভয়টা কাজ করে যে এ ধরনের হেনস্তা মুখ বুজে সহ্য করলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরও বাড়বে।
গোপালগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের ছেলে-মেয়ের মতো। তাদের সঙ্গে আমাদের বিরোধ নেই। আমার বাসায় অনেকে ভাড়া থাকে, তাদের আমি সবসময় সন্তানের মতো দখি। মাঝেমধ্যে যে সংঘর্ষ হয় সেগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তবে অনেক সময় দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গুরুজনদের সম্মান করে না, আমাদের স্থানীয় সংস্কৃতি মানে না। ছেলে-মেয়ে একসঙ্গে এমনভাবে ঘুরে বেড়ায় যেগুলো তাদের নিয়ে বিরূপ ধারণা তৈরি করে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্থানীয়দের হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন তো আর স্থানীয়দের বিষয় না। যাদের এসব আন্দোলনে ক্ষতি হয়, তারাই দেখা যায় আন্দোলন থামাতে স্থানীয়দের ব্যবহার করে। তবে এ ধরনের ব্যক্তির সংখ্যা খুব কম। অধিকাংশই শিক্ষার্থীদের স্নেহ করে। এমনকি যখন এ ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আমরা বাড়িওয়ালারাই তাদের রক্ষায় মরিয়া হয়ে উঠি।
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে এমন উদ্ভূত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি হাবিপ্রবি ক্যাম্পাস সংলগ্ন আশপাশের জায়গাগুলোতে। তবে বিগত সময়ে যে ঘটনাগুলোর কারণে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘাত লেগেছিল, এর মধ্যে অন্যতম কারণ ছিলো মেস ভাড়া। এছাড়াও স্থানীয় ব্যবসায়ীদদের সাথে কথাকাটাকাটি ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করার কারণে বেশ কয়েক বছর পূর্বে সংঘর্ষে জড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তিনি বলেন, বর্তমানে স্নাতক পর্যায়ে আসন সংখ্যা কমানোর পাশাপাশি মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন আবাসিক হল খুলে দেয়ায় স্থানীয়দের একচেটিয়া মেস ব্যবসা কমে গেছে। এতে করে স্থানীয়দের সঙ্গে আর সংঘর্ষ দীর্ঘ সময়জুড়ে ঘটেনি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শক্তিশালী মনিটরিং সেলও কাজ করছে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে। এসব কারণে বিগত যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা নিরাপদে আছে বলে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামান বলেন, স্থানীয়দের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চলমান দ্বন্দ্ব কমিয়ে আনতে হলে প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া জরুরি। তদন্তে যারাই দোষী সাব্যস্ত হোক; তাদের বিচারের মুখোমুখি করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করা গেলে এ ধরনের ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে।
ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আধিপত্যের কথা উল্লেখ করে সম্প্রতি সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটে যাওয়া রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, আমরা দেখছি বর্তমানে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের দৌরাত্ব্য বেড়ে গিয়েছে। এটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা চাই এখানে বাইরের মানুষ আসুক। সৌন্দর্য উপভোগ করুক। কিন্তু সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসে তারা বিভিন্ন অনৈতিক কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ছে এবং শিক্ষার্থীদের হেনস্থা করছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আজকে থেকে আমরা বহিরাগতদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাব। সন্ধ্যার পর বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে দিব না। আমাদের শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করব, তারা যেন সার্বক্ষণিক পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে চলাফেরা করে।