১৪ মার্চ ২০২৩, ০৮:১৭

ইউজিসির চিঠির পর জাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে নতুন কমিটি

ইউজিসির চিঠির পর জাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে নতুন কমিটি  © টিডিসি ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ আনিত একাধিক অভিযোগের অধিকতর তদন্তে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক কৌশিক সাহাকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের নতুন এ কমিটি করে জাবি প্রশাসন।

সোমবার (১৩ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এই কমিটি গঠন করা হয়। আগের কমিটির প্রতিবেদনের পর অধিকতর তদন্তের জন্য নতুন এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির প্রধান হিসেবে আছেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক কৌশিক সাহা এবং সদস্য সচিব হিসেবে ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) শাহনাজ হোসেন। এ ছাড়া কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শফি মুহাম্মদ তারেক, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ইসমত আরা এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আফসানা হক।

প্রসঙ্গত, মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের শিক্ষক বানানোর প্রলোভনে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, শিক্ষক নিয়োগে প্রভাব বিস্তার ও জোর করে গর্ভপাতের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রেক্ষিতে গত ৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।

তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৎকালে উপাচার্য একটি প্রাথমিক কমিটি করেন। তবে সেই কমিটির কার্যক্রমকে পক্ষপাতমূলক ও সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি পালন করেছে।

সংবাদপত্রে এসব বিষয় প্রকাশিত হওয়ার পর গত ১ মার্চ এক চিঠিতে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। কমিশনের চিঠির পরপরই মূলত এই তদন্ত কমিটি গঠন করে জাবি প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, গত বছরের শেষ দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাহমুদুর রহমান জনির নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের একটি অডিও কল রেকর্ড ফাঁস হয়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা, তার পরীক্ষার পরীক্ষক হওয়ার মতো একাডেমিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এরপর প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে দিয়ে দায়মুক্তিপত্র লেখানোর অভিযোগ প্রকাশ পায়।

তখন এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠিত হলে তারা গতবছরের ৮ই ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য জনির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। তবে, এ তদন্ত কমিটির বিরুদ্ধে তদন্ত নিয়ে লুকোচুরির অভিযোগ তুলেছিলেন প্রগতিশীল শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি তারা এ ঘটনার সঠিক ও দ্রুত তদন্ত দাবি জানিয়েছিলেন।