গবেষণায় চুরির দায়ে অভিযুক্ত জাবি শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে
শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে বসতে যাচ্ছেন গবেষণা প্রবন্ধে প্লেজারিজম বা চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইংরেজি বিভাগের সভাপতি সাবেরা সুলতানা। আগামীকাল মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) এই বোর্ডে বসছে বলে জানিয়েছেন বিভাগটির শিক্ষকরা। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে একাধিকবার চিঠি দিয়েও জবাব না পাননি তারা। একইসঙ্গে চিঠিতে নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত থাকায় আপত্তি জানিয়েছেন বিভাগটির শিক্ষকরা।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত শিক্ষকের অবস্থান স্পষ্টীকরণের জন্য বিভাগীয় সভাপতি বরাবর লেখা দুটি চিঠি গণমাধ্যমের কাছে এসেছে। এর প্রথম চিঠিতে গত বছরের ১৯ অক্টোবর একটি দৈনিকের খবরের বরাত দিয়ে বলা হয়, “ইংরেজি বিভাগের অন্যতম শিক্ষক জনাব সাবেরা সুলতানা’র (সহযোগী অধ্যাপক) বিষয়ে গত বছরের ১২ অক্টোবর গণমাধ্যামে “গবেষণা প্রবন্ধে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ” শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আমরা এই প্রতিবেদনটি পড়ে একইসাথে বিস্মিত ও বিব্রত হয়েছি।"
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের ব্যাখ্যা জানার জন্য দ্রুত জরুরি সভা আহ্বানের অনুরোধ করেন বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান ও অধ্যাপক ড. আহমেদ রেজা। চিঠির অনুলিপি সংশ্লিষ্ট বিভাগের সকল শিক্ষক, অনুষদের ডিন ছাড়াও রেজিস্ট্রার ও উপাচার্যকে দেওয়া হয়েছিল। তবে প্রায় একমাস পর্যন্ত অপেক্ষা করে কোনো সাড়া না পেলে পুনরায় চিঠি দিয়েও কোনো জবাব পাননি চিঠি প্রদানকারী জেষ্ঠ শিক্ষকদ্বয়।
এ বিষয়ে অধ্যাপক মনিরুজ্জামান বলেন, পত্রপত্রিকায় আমাদের সহকর্মীর নামে চৌর্যবৃত্তির মত একটি সংবেদনশীল অভিযোগ দেখে দুঃখ পেয়েছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম যাতে এই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এটা বিভাগ ও আমাদের জন্য আনন্দের হতো। কিন্তু একাধিকবার অনুরোধ করলেও তিনি জবাব দেওয়ার কোনো প্রয়োজন মনে করেন নি।
তিনি আরও বলেন, এরকম অভিযোগ থাকলে তিনি কি করে শিক্ষার্থীদের প্রশংসাপত্র দেবেন? বরং বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি কাল (১৪ মার্চ) বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে তিনি সদস্য হিসেবে থাকছেন। আমরা মনে করি ইতোমধ্যে তিনি নৈতিক যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন। এরকম একজন শিক্ষকের সঙ্গে উপাচার্য কিভাবে একসাথে বসবেন? উপাচার্যের প্রতি অনুরোধ থাকবে এই অভিযোগের সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগ বোর্ড স্থগিত রাখতে।
আগামীকাল সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করবেন এমন একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যার বিরুদ্ধে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ তিনি কি করে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করবেন?
এ বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক সাবেরা সুলতানা বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আগেই পরিষ্কার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নতুন করে কিছু বলার নেই।
বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম ও রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি।