১২ মার্চ ২০২৩, ২১:৫৩

রেলপথ অবরোধ একদল শিক্ষার্থীর, ভিসি ভবনের সামনে আরেকদল

  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনার জের ধরে ৭ দফা দাবিতে আমরণ অনশন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থী। আজ রবিবার (১২ মার্চ) বিকেল ৫টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে তারা অনশন শুরু করেন।

এদিকে, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ রেললাইনের ওপর অবস্থান নিয়ে রেল অবরোধ করেছেন। রাত পৌনে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ সংলগ্ন রেললাইনে টায়ার জ্বালিয়ে অবস্থান নেন তারা। পরে রেললাইনের স্লিপার খুলে ফেলেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।  ফলে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে কোনো ট্রেন ঢুকছে না। কোনো ট্রেন রাজশাহী থেকে বেরও হতে পারছে না। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বিভিন্ন ব্যানার ও শিল্পকর্ম এনে রেললাইন দু'পাশে আগুন জালিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের হাতের কারুকার্যের মাধ্যমে তৈরি করা বিশাল আকৃতির ময়ুর পাখি এনে আগুনে পুড়িয়ে দেন। 

এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, গতকালের ঘটনায় আমরা এখনো কোনো সুষ্ঠু সমাধান পায়নি। আমার ভাইয়েরা রক্তাক্ত অবস্থায় মেডিকেলে ভর্তি আছে। আর এদিকে আমাদের প্রশাসন ঘুমান্ত অবস্থায় রয়েছে। আমরা এমন প্রশাসন চাই না। তাদেরকে আমরা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। আমাদের দাবিগুলো না মানা পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলমান থাকবে বলে জানান তিনি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক ছেড়ে চারুকলায় রেললাইন অবরোধ করতে গেছে। সেখানে সহকারী প্রক্টরদের পাঠানো হয়েছে। তাঁরা শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন।


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনার জের ধরে 

এদিকে, ৭ দফা দাবিতে বিকেল ৫টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থী। তারা হলেন- ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, সোহাইব খান ও ফয়সাল আহমেদ, দর্শন বিভাগের শাহাদাৎ হোসেন ও রাবেয়া মুহিব, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের রিমি আক্তার ও রাবিয়া জান্নাত রাইসা এবং মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাত হাওলাদার। 

তাদের ৭ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, শনিবারের ঘটনার জন্য প্রক্টরের পদত্যাগ ও প্রশাসনের জবাবদিহি, ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ভার প্রশাসনকে নিতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ আবাসিক করতে হবে এবং এ বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে, পাসকার্ড ব্যতীত ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে, ক্যাম্পাসের রিকশা ভাড়া, ডাইনিং ও খাবার হোটেলগুলোয় খাবারের দাম নির্ধারণ ও মান নিশ্চিতকরণ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রেল স্টেশন পুনরায় চালু করতে হবে। 

এ বিষয়ে অনশনরত হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী রাবিয়া জান্নাত রাইসা বলেন, আমাদের দাবি নিরাপদ ক্যাম্পাস। গতকাল যে ঘটনাটা ঘটছে তার কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ প্রথমে প্রশাসন নেয়নি। আমরা এর বিচার চাই। আমাদের যে সাত দফা আছে সেটা অবিলম্বে প্রশাসনকে মেনে নিতে হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবে।