রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
আবাসিক এলাকায় বেড়েছে বহিরাগত তরুণ-তরুণীদের উৎপাত, জড়াচ্ছে অপকর্মে
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৩, ০৪:৩০ PM , আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৩, ০৫:৩৯ PM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে বেড়েছে বহিরাগতদের উৎপাত। বিশেষ করে ক্যাম্পাসের পূর্বদিকের আবাসিক হল এলাকায় তাদের অবাধ বিচরণ একটু বেশি। শহীদ শামসুজ্জোহা হল ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের পুকুরপাড়ে প্রতিদিনই উঠতি বয়সী কিছু ছেলে-মেয়েদের আনাগোনা প্রায়ই দেখা যায়। পুকুরের পাশে স্থাপন করা বসার স্থানগুলোতে তারা দীর্ঘ সময় ধরে অবস্থান নিয়ে থাকে। কোনো কোনো যুগল সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত অবধি অবস্থান করে। এসময় কিছু কিছু যুগলকে আপত্তিকর অবস্থায়ও দেখা যায় বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।
অভিযোগ রয়েছে, শুধু অবাধ মেলামেশাই নয়। সন্ধ্যা হলেই বহিরাগতরা এখানে এসে মাদকের আসর বসায়। শিক্ষার্থীদের আবাসিক এলাকায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক ও কর্মকর্তারাও। এছাড়া ক্যাম্পাসে বেড়েছে চুরি-ছিনতাই। বহিরাগতই এসব অপকর্মে জড়িত হয় বলে জানা গেছে।
দুপুরের দিকে সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের পুকুর পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, মাথায় ছাতা দিয়ে বসে আছেন এক যুগল। ভরদুপুরে এমন একটি আবাসিক এলাকায় কেন তারা বসে আছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তাদের একজন বলেন, এদিকে তো কোথাও লেখা নেই যে আবাসিক এলাকায় বসে থাকা যাবে না। তাহলে সমস্যা কোথায়? এছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় তো পাবলিক প্রপার্টি, এখানে ঘুরতে আসলে সমস্যা কোথায়?
হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, হল এলাকায় বহিরাগতদের এমন অবাধ মেলামেশা আবাসিক পরিবেশ নষ্ট করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রয়েছে ছেলেদের ৮টি আবাসিক হল ও ১টি ডরমেটরি। এছাড়া প্রাধ্যক্ষদের বাসভবন ও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য নির্ধারিত বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবনও রয়েছে এই দিকে।
শহীদ শামসুজ্জোহা হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, পুকুরের পাশে স্থাপিত বসার স্থানগুলো বহিরাগতরাই দখল করে রাখে। মাঝে মাঝে কিছু উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণী এমন আপত্তিকর অবস্থায় বসে থাকে যা অত্যন্ত বিব্রতকর।
সাকলায়েন মুস্তাক নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, পরিবেশের সৌন্দর্য্য রক্ষার্থে এগুলো বন্ধ করা উচিত। এটা নোংরামি ছাড়া আর কিছুই না। বর্তমানে বধ্যভূমির মতো একটা জায়গাতে পুলিশ ফাঁড়ি উঠে যাওয়ায় ওই দিকে সকাল-সন্ধ্যা কিছু নোংরা লোকের জন্য পরিবেশটাই নোংরা হয়ে গেছে। এদের অত্যাচারে হলের পুকুরে গোসলও করা যায় না। বসার বেঞ্চগুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছিল কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়টা এখন চিড়িয়াখানা মনে হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. একরামুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি ব্যক্তিগতভাবেও লক্ষ্য করেছি। আমার হলের শিক্ষার্থীদের একটি আবাসিক পরিবেশ আছে, সেখানে এভাবে বহিরাগতরা অবাধে চলাফেরা করার কোনো সুযোগ নেই। আমি খুব দ্রুতই এই জায়গাগুলোতে ব্যানার লাগিয়ে দেবো, সেখানে এই জায়গাটির সংরক্ষণের বিষয়টি উল্লেখ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিও নিয়মিত অভিযান চালাবে বলে জানান তিনি।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম. তারেক নূর বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় অনেক সুন্দর একটি ক্যাম্পাস। এখানে দর্শনার্থীরা আসতে পারে। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আবাসিক এলাকায় অবাধে মেলামেশার কোনো সুযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব বিষয়ে কোনো ছাড় দেবে না। আমরা এ বিষয়ে খেয়াল রাখবো।