‘বিদ্যুৎ সাশ্রয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে’
সাসটেইনেবল এনার্জির একটি ধাপ হচ্ছে সাশ্রয়। বিদ্যুৎ সাশ্রয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তাই অতিরিক্ত ১০% বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে সর্বমোট ৪০% বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা সরকারের প্রধান লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সোলার ও রিনিউএবল এনার্জি এসোসিয়েশনের সভাপতি নুরুল আকতার। ৯ মার্চ (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘টেকসই শক্তি সপ্তাহ-২০২৩’ এর সমাপ্তি এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সাসটেইনেবল এনার্জি এবং স্মার্ট বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করতে কয়েকটি ধাপ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সময়মত সুইচ অফ, ফ্যান ও এসি বন্ধ করলে ৫-১০% বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা সম্ভব। এই বিদ্যুৎ সাশ্রয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেজন্যই আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে ১০% সাশ্রয় হার অর্জনের চেষ্টা করছি। একটু সচেতন হলেই তো বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়। জার্মানির মতো দেশগুলো এই নিয়মগুলো মেনেই তাদের বিদ্যুতের ৫০% পর্যন্ত সাশ্রয় করে। এখন সারা বাংলাদেশে চার কোটি সিলিং ফ্যান ব্যবহৃত হয়। যদি একটা ফ্যান ১০০ ওয়াট বিদ্যুত ফার্স্ট স্পিডে গ্রহণ করে , সেকেন্ড স্পিডে এটি ৬০ ওয়াট এবং থার্ড স্পিডে ৩০ ওয়াট গ্রহণ করবে। অনেক সময় ফার্স্ট স্পিডে ফ্যান চালানোর দরকার না হলেও আমরা তা ফার্স্ট স্পিডে দিয়ে রাখি।
সভাপতির বক্তব্যে নুরুল আকতার আরও বলেন, আমরা সোলার প্যানেল নিয়ে বেশি লাফালাফি করি। কিন্তু বাংলাদেশে সোলারের জন্য স্থান সংকুলান করা খুবই কঠিন। এখন পর্যন্ত উল্লেখ করার মতো মাত্র ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। এই সমস্যার সমাধানে ১০০০০ বড় ইন্ডাস্ট্রির ছাদ, চরের জমিগুলোকে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাহলে জাতীয় বিদ্যুৎ সরবরাহে সৌর বিদ্যুতের সরবরাহের হার বাড়বে। আমাদের দেশে দশ লক্ষ ব্যাটারিচালিত যানবাহন আছে। এগুলোকে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি দ্বারা পুনঃস্থাপিত করলেও বিদ্যুত সাশ্রয় হবে। যদি ৪০% বিদ্যুৎ আমরা সাশ্রয় করতে পারি, তাহলেই আমাদের উদ্দেশ্য পূর্ণাঙ্গভাবে সফল হবে।
আরও পড়ুন: টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম জয় টাইগারদের
সাম্প্রতিক বিভিন্ন দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখপূর্বক সমাধান হিসেবে এনার্জি এন্ড পাওয়ার পত্রিকার সম্পাদক মোল্লা আমজাদ বলেন, কিছুদিন পরপর ঢাকায় খুব বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটে। অভিযোগ তোলা হয়। এটা নিয়ে কাঁদা ছোড়াছুড়ি চলে। সায়েন্সল্যাবে দুর্ঘটনা ঘটলো কয়দিন আগে, আবার সিদ্দিকবাজারে হলো। কয়েকটি পরিবেশবাদী সংগঠন প্রত্যেক ভবন বসবাসের উপযোগিতা যাচাই করে সার্টিফিকেট দিতে বলছেন। কিন্তু সরকারের পক্ষে একাই সার্টিফিকেশন করা সম্ভব না। এর জন্য বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করতে হবে। তারা আউটসোর্সিং হিসেবে এসব ভবনের বাসযোগ্যতা যাচাই করতে পারেন। এভাবে ভবনের নিরাপত্তা যাচাই করতে পারলে দুর্ঘটনা কমবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে থেকে স্কুলের শিক্ষার্থীদেরকে সাসটেইনেবল এনার্জি সম্পর্কে সচেতন করতে হবে । তারা শুধু উদ্ভাবকই হবে না, বরং ব্যবহারকারী বা কনজিউমার হবে। ব্যবহার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানা না থাকলে সেটার সঠিক প্রয়োগ করা সম্ভব না। আজকের অনুষ্ঠানে যে সমস্ত প্রকল্প গুলো জমা হয়েছে। তা বাস্তবায়ন যোগ্য কি না তা আলোচনা সাপেক্ষ। তবে আমরা যেহেতু স্মার্ট বাংলাদেশ চাই, তার জন্য স্মার্ট ইউজার হতে হবে। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টসহ নানান ধরনের টেকসই এনার্জি প্রকল্প যখন পরিকল্পনা থেকে বাস্তবে প্রয়োগ করা যাবে এর ব্যবহার জানলে। প্লাস্টিক কিভাবে ব্যবহার করগে হবে, কিভাবে ইলেক্ট্রিসিটি ইউজ করতে হবে। এগুলো না জানার কারণে আমরা আনসাসটেইনেবল ইউজার হয়ে যাচ্ছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হাফিজ মোঃ হাসান বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, এমপি। এসময়ও উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, স্টারলাইন গ্রুপের উদ্যোক্তা মাইনুদ্দিন আহমেদ, ড. এস এম আসিফ শামসসহ আরও অনেকেই।