রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগে ফের ‘তালা’
সাত মাসেও ফলাফল বিপর্যয়ের সমাধান না হওয়ায় ফের বিভাগে ‘তালা’ দিয়ে আন্দোলন শুরু করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৬ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিভাগের চেয়ারম্যান ও অফিস কক্ষে তালা দেয়। এসময় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পাঁচজন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। পরে, তারা বিভাগের সামনে অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হল পুনর্মূল্যায়ন করে দ্রুত নতুন ফলাফল প্রকাশ ও ছাত্রবান্ধব বিভাগ সৃষ্টি করা।
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৫ আগস্ট ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ফল প্রকাশ করা হয়। কাঙ্ক্ষিত ফল না পেয়ে ওইদিনই সকল শিক্ষার্থী সভাপতির কক্ষে তালা ঝুলিয়ে ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান। ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্র উপদেষ্টা তিনদিনের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।
পরবর্তীতে, সমাধান না হওয়ায় গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরন অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন উপাচার্যের আশ্বাসে রাত সাড়ে আটটার দিকে অনশন ভঙ্গ করে তারা। এসময় উপাচার্যের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তারপরেও কোনও সমাধান হয়নি।
তদন্ত কমিটির আহবায়ক আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. আনিসুর রহমান বলেন, আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থী সকলের সাথে কথা বলেছি। সবার লিখিত বক্তব্য জমা নিয়েছি। শীঘ্রই আমরা তিনজন বসে, আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব এবং তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিব।
আরও পড়ুন: মুচলেকা নিয়ে অভিভাবকের জিম্মায় ইডেন ছাত্রী, ইবি ছাত্রকে শোকজ
আন্দোলনরত বায়জিদ হোসেন বলেন, পরিকল্পিতভাবে আমাদের ফেল করানো হয়েছে। প্রশাসনের কাছে যখন আমরা যাচ্ছি, তখন তারা বলছে তোমরা স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে যাও, এ কথা সাত মাস আগে বললে আমাদের সাত মাস নষ্ট হতো না। সাত মাস ধরে আমরা লড়ছি। আমাদের সাথে কী অন্যায় হয়েছে, তারা তা খুঁজে পাচ্ছে না। আমাদের কোন কোর্সে কত নাম্বার দেওয়া হয়েছে, তা আমরা দেখতে চাই। একটা বিভাগ এভাবে চলতে পারে না। আমরা এর সমাধান চাই।
আরেক আন্দোলনকারী জাহিদ হাসান বলেন, আমাদের যে শিক্ষকরা হুমকি দিয়েছে তাদের বিচার করতে হবে। তাদের ক্লাস পরীক্ষা থেকে বিরত রাখতে হবে। প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যার ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা থাকলেও, তিন মাসেও রিপোর্ট জমা দেয়নি। আমাদের ফলাফল দিতে হবে। যারা হুমকি দিয়েছে তাদের বিচার করতে হবে। এর আগে বিভাগ খুলতে হলে, আমাদের লাশের উপর দিয়ে যেতে হবে।
এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আতাউর রহমান বলেন, যারা পাশ করেছে তাদের ভর্তির জন্য নোটিশ দিয়েছি। এ নোটিশ দেওয়ার পরপরই আন্দোলনকারীরা বিভাগ বন্ধ করে দিয়েছে। আমি শিক্ষকদের নিয়ে বসে, পরবর্তীতে কী করা হবে তা সিদ্ধান্ত নিব।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমি তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে খোঁজ নিব। সমস্যাটি সমাধানে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।