ঢাবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনাটি ‘সাজানো’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী এহসান উল্লাহ ধ্রুব’র আত্মহত্যার চেষ্টাকে ‘সাজানো ঘটনা’ বলে দাবি করেছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীদের একাংশ। অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দীনের প্রতি অপবাদের প্রতিবাদে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ কথা বলেন তারা।
রবিবার (৫ মার্চ) সকাল ১১ টায় ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন বিভাগের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশ নেয়। মানববন্ধনে শেষে অধ্যাপক তানজীমউদ্দীনের অপবাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন
মানববন্ধনে ওইদিন ক্লাসে উপস্থিত অধরা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের শিক্ষকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো সব মিথ্যা। আমাদের শিক্ষকের আচরণ খুবই শিক্ষক সুলভ ও দায়িত্বশীল ছিল। তার যা আচরণ করার ছিল, তার বাইরে কিছু করেননি। আমরা যেহেতু সেদিন দেখেছি ক্লাস কী হয়েছে তাই ধ্রুবের আনা সবধরনের অভিযোগের বিরুদ্ধে অবস্থান করছি। আমরা চাই সত্যটা উদঘাটন হোক এবং সবাই যেন সত্যের পক্ষে থাকে।
মানববন্ধন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাফি বলেন, আমাদের যেই সহপাঠী আত্মহত্যার নাটকটি করেছে, তার বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই অভিযোগ ছিল। সে প্রথম বর্ষ থেকেই একজন শিক্ষার্থীকে মানসিক পীড়া দিয়ে এসেছে। সেই সহপাঠী নানান প্রকার ভয়ের কারণে কোনোরকম অভিযোগ করতে পারেনি। এছাড়াও আরো দুই-তিন জন মেয়েকে মানসিক পীড়া দিয়ে এসেছে। কখনোই সেই শিক্ষার্থীরা ভয় বা সামাজিক অবস্থানের জন্য মুখ খুলেনি। আমরা তার এই পাগলামি সম্পর্কে অবগত ছিলাম। সে এমন একটা নাটক সাজিয়ে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য এমন কিছু করবে তা আমাদের ভাবনা-অতীত। আমরা তার এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই। সবাইকে অনুরোধ করবো, আপনারা সত্যতা জানুন। যেই ছাত্র সংগঠনকে সে ব্যবহার করেছে স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করেছে, সেই সংগঠনকে অনুরোধ করবো আমাদের কাছ থেকে সত্য জানুন।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাষক তানভীর হাবীব বলেন, যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত একজনকে বা একজন দোষী শিক্ষার্থীকে যদি একজন শিক্ষক বকা নাই দিতে পারেন তবে আমি মনে করি না, তিনি শিক্ষক হওয়ার যোগ্য। তানজীম স্যার বকা দিয়ে যদি দোষ করে থাকেন তাহলে সেই দোষে আমরা সবাই দোষী। যৌন হয়রানির শিকার এক শিক্ষার্থীর পক্ষে যদি আমি না দাড়াতে পারি তাহলে আমার শিক্ষক হওয়ার নীতিগত কোনো অধিকার নাই। তার (তানজীমউদ্দীন) কাছে যেহেতু অভিযোগ এসেছে, তিনি যদি সেই দায়িত্ব পালন করে দোষী হন তাহলে তোমরাও(শিক্ষার্থীরা) দোষী ও আমরাও দোষী।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শ্রেণীকক্ষে অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে 'অপমান' করার অভিযোগ উঠেছে। এসএম এহসান উল্লাহ ওরফে ধ্রুব নামে ওই শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপ-সম্পাদক। তিনি (বৃহস্পতিবার) ২ মার্চ ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।