তিনগুণ টাকা দিয়েও হলে সিটের নিশ্চয়তা নেই রাবির নবীনদের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হল সংযুক্তি ফি বাড়িয়ে ২ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গেল বছরের থেকে তিনগুণেরও বেশি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হলে ওঠার অপেক্ষায় থাকা শিক্ষার্থীরা। এত টাকা দিলেও সিটের নিশ্চয়তা নেই নবীন শিক্ষার্থীদের। কবে পাবেন তাও তারা জানেন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন হলে সংযুক্ত করা হয়। আসন বন্টন না করা হলেও সংযুক্তি বাবদ একটি ফি দিতে হয় শিক্ষার্থীদের। গত বছরও এ ফি ছিল ৯০০ টাকা। হলভেদে ফি কিছুটা ভিন্ন হলেও চলতি শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য এটি বাড়িয়ে ২ হাজার ৮০০ টাকা করা হয়েছে। এটি সব হলের জন্য প্রযোজ্য।
এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থী বলছেন, তারা আসন বরাদ্দ পায়নি। বিজ্ঞপ্তিতে দেখেছে ২ হাজার ৮০০ টাকা জমা দিতে হবে হল সংযুক্তি ফি বাবদ। সিনিয়রদের সাথে কথা বলে জেনেছেন, গতবারও হল ফি ৯০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। আবাসিকতার সুযোগ না পেয়েও এত বড় অঙ্কের টাকা পরিশোধ করা তাদের জন্য কঠিন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল আবাসিক সুবিধা। কিন্তু আসন পেতে অনেক সময় লেগে যাবে। মেসে ভাড়া দিয়ে থাকতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে অন্যান্য খরচ আছেই। সংযুক্তি ফি বাবদ ২ হাজার ৮০০ টাকা করা হয়েছে। যা গত বছরের থেকে প্রায় তিনগুণ। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।
মুসতাফিজ তাসনিম নামের এক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘হলে ভর্তির জন্য এতো টাকা লাগে? এ জীবনে সিট পাবে কিনা তার কোনো নিশ্চয়তা নাই। টাকা যদি দেওয়াই লাগে তাহলে আগে হলের সীট বরাদ্দ দেওয়া হোক।’
শাওন হোসাইন লিখেছেন, ‘সিটে তুলে তারপর কিছু টাকা নিলেও সেটা যৌক্তিক। হলের সিট কবে পাবো তার কোনো ঠিক নাই। হলে ভর্তির জন্য ২ হাজার ৮০০ টাকা অরাজকতা ছাড়া কিছুই না। ছাত্রদের টাকা দেখলেই প্রশাসনের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে।’
শহিদ ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, অনেক ক্ষেত্রে হল প্রশাসন টাকা দাবি করে বসে থাকে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এখানে নেই কোনো জবাবদিহিতা, না আছে স্বচ্ছতা। আমি রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিতে যাব। আমাকে কেন হলের কারেন্ট বিল, ওয়াই-ফাই বিল ইত্যাদি দিতে হবে? যেখানে আমি হলেই থাকছি না।’ মো. সাইদুল ইসলাম লিখেছেন, ‘প্রভোস্টের দায়িত্ব শুধু টাকা উঠানো, হলে ওঠানো নয়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক ও খালেদা জিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ ড. সৈয়দা নুসরাত জাহান বলেন, ‘ইতিপূর্বে সংযুক্তি ফি হলভেদে আলাদা ছিল। সব হলেই ৯০০ টাকা ছিল না। প্রাধ্যক্ষ পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যেন সবগুলো হলে একই ফি থাকে। হলের বিভিন্ন খাত থাকে সেগুলোর জন্য ১ হাজার ৮০০ টাকা এবং সংযুক্তি ফি বাবদ ১ হাজার টাকা ধরে নতুন সংযুক্তি ফি ২ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।‘