জাহেদের আহত হওয়ার সময় চেকপোস্টে ‘লুডু খেলায়’ ব্যস্ত ছিল পুলিশ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বাংলা বিভাগের মাস্টার্সে এক শিক্ষার্থী দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে মেডিকেলে ভর্তি রয়েছেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, চেকপোস্টে থাকা পুলিশের দায়িত্ব অবহেলার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ‘লুডু খেলায়’ ব্যস্ত ছিলেন। ঘটনার পর শুক্রবার (৩ মার্চ) রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটছে। প্রশাসন শুধু আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে। ক্যাম্পাসের ভেতরেও আমরা নিরাপদ না। তাহলে ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারে পুলিশের চেকপোস্ট বসিয়ে কী লাভ! ক্যাম্পাসের যানবাহনগুলোতে বিশেষ স্টিকারের আওতায় আনার পরেও এমন ঘটনা ঘটছে।
তারা বলেন, কর্তব্যরত পুলিশরা তাদের দায়িত্ব পালন না করে লুডু খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এসব লুডু পুলিশ আমরা চাই না। জাহেদের মতো আর কত শিক্ষার্থীর রক্ত ঝরলে প্রশাসন ঠান্ডা হবে? দোষীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসন ভবন ত্যাগ করবেন না বলে প্রশাসনকে জানিয়ে দেন তারা।
এর আগে এদিন রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের দক্ষিণ পাশের রোডে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল জাহেদ গুরুতর আহত হন। পরে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এসময় বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রবিউল আওয়াল বলেন, ‘‘আজকে আমার ভাইকে মেরেছে; কাল আমার স্যারকে মারবে। পরশু আমার বোনকে মারবে। আর প্রশাসন শুধু তদন্ত কমিটি গঠন করে আশ্বাস দিয়ে যাবে। ক্যাম্পাসের পুলিশেরা এখন লুডু পুলিশ হয়ে গেছে।’’
আরও পড়ুন: ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে রাবি ছাত্র আহত, রামেকে ভর্তি
রবিউল বলেন, আমাদের একটাই দাবি ওখানে কর্তব্যরত থাকা পুলিশদের জবাবদিহি করতে হবে। এভাবে আর কত শিক্ষার্থীর রক্ত ঝরলে প্রশাসনের টনক নড়বে? নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি এ শিক্ষার্থীর।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর পুরণজিৎ মহালদার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ক্যাম্পাসের যানবাহনগুলো সহজে চিহ্নিত করার তাগিদে বিশেষ স্টিকারের আওতায় এনেও এমন এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে। এটা কর্তব্যরত পুলিশদের গাফিলতির ফল। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও নিয়মকানুন মানছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, আমরা খবর ওই শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার জন্য রামেকে পাঠাই এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করায়। আর পুলিশ বাহিনীর সাথে আমরা বসবো। ক্যাম্পাসের মতো একটা জায়গায় এমন ঘটনা কীভাবে ঘটছে তা জানতে চাওয়া হবে। সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।