ঢাবির সিনেটের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন শুরু শনিবার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিনেটের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন আগামী শনিবার (৪ মার্চ) থেকে শুরু হবে। চার ধাপে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
প্রথম ধাপে ঢাকার বাইরের ২৯ টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হবে। এরপর ১১ এবং ১৪ মার্চ ঢাকার বাইরে যথাক্রমে ৯ ও ৪টি কেন্দ্রে এবং সর্বশেষ ঢাকায় আগামী ১৮ মার্চ নির্বাচনের মূল পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনে সরকারপন্থী গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদ ২৫টি আসনের বিপরীতে ২৫ জনের প্যানেল ঘোষণা করেছে। তবে নির্বাচনে বিএনপিপন্থিরা মনোনয়নপত্রই জমা দেননি।
নির্বাচনে অংশ নিতে ২৫ সদস্যের স্বতন্ত্র প্যানেল তৈরি করেছিল জামায়াতে ইসলামীপন্থীরা। তবে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের মাত্র তিন দিন আগে হয়রানি-গ্রেপ্তারসহ নানা অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে তারা। অন্যদিকে নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দাবি করে ৯ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী একত্রিত হয়ে ‘টিম অপরাজেয়’ ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে সাদা দলের আহ্বায়ক লুৎফুর রহমান বলেন, সাদা দল বলতে এখানে যারা জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না, যা নেতৃত্ব দেয় বিএনপি। যেহেতু সামনে জাতীয় নির্বাচন, অনেক অর্থ, সময় ও শ্রমের প্রয়োজন সেহেতু সিনেট নির্বাচনের জন্য সারাদেশে লোকবল নিয়োগ বা আর্থিক সাপোর্ট দেওয়া বিএনপির পক্ষে অত্যন্ত কষ্টকর এবং অনেকটা অসম্ভবও। তাই নির্বাচন বয়কট নয় বরং নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না সাদা দল।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সিনেট নির্বাচন আগামী শনিবার শুরু হবে। প্রথমে ২৯ টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। ইতোমধ্যে দায়িত্বশীলরা কেন্দ্রগুলোতে চলে গেছেন। পরবর্তীতে ১১ মার্চ ৯ টি কেন্দ্রে এবং ১৪ মার্চ ৪ টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সর্বশেষ ১৮ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোটগ্রহণ শেষে সিনেট ভবনে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
আরও পড়ুন: জবি শিক্ষকদের নতুন সিদ্ধান্তে শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনার কী হবে
সাদা দল বা জামাতপন্থীরা কেন নির্বাচনে নেই সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিনেটের নির্বাচন মূলত দল এবং ব্যাক্তি কেন্দ্রীক। এখন পর্যন্ত মোট ৬৮ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। আমরা দেখেছি সাদা দল মনোনয়ন পত্র জমাই দেয়নি। আর জামাতপন্থীরা একটি সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলো তারা নির্বাচন বয়কট করেছে কিন্তু সেদিনের আগেই মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার তারিখ শেষ হয়ে গিয়েছিল। কেন সাদা দল বা জামাতপন্থীরা নির্বাচনে আসলো না বা বয়কট করেছে সেটা তারাই ভাল জানেন, আমরা সেটা জানি না। এখন অপেক্ষা শুধু ভোট গ্রহণ এবং কারা জয়লাভ করবে সেটা দেখার।
এবারের নির্বাচনে ৫২ হাজার ৪৭৮ জন আজীবন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট এবং ৬৮৩৭ জন সেশন গ্র্যাজুয়েট ভোটারের বিপরীতে ২৫ পদে মোট ভোটার হয়েছেন ৬৮ জন। আগামী ৪ মার্চ ঢাকার বাইরের ২৯টি কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে। সব কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ শেষে ১৯ মার্চ নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অপটিক্যাল কাউন্টিং সিস্টেম পদ্ধতিতে ভোট গণনা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২০১৮ সালের সর্বশেষ সিনেটের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচনের ২৫ জন প্রতিনিধির মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদের ২৪ জন ও জাতীয়তাবাদী পরিষদ সাদা দল থেকে একজন নির্বাচিত হয়েছিলেন। বাম সমর্থকদের প্যানেল প্রগতি পরিষদ কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কেউ বিজয়ী হতে পারেননি।