ঢাবিতে এক বছরে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার সাংবাদিকসহ ২৭ শিক্ষার্থী
২০২২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২৭ জন সাধারণ শিক্ষার্থী। এছাড়া বিভিন্ন ঘটনায় হল ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ২৬ জন। এমনকি পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হেনস্তার শিকার হয়েছেন তিন সংবাদকর্মী। আর এসব ঘটনায় মুখ্য ভূমিকায় ছিল ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট টর্চার (স্যাট) এর বার্ষিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে নির্যাতন সংক্রান্ত এ তথ্য।
আজ মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট টর্চার (স্যাট) কর্তৃক আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষার্থী নির্যাতনের এই বাৎসরিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক সালেহ উদ্দিন সিফাত লিখিত প্রতিবেদনটি পাঠ করেন।
লিখিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পত্র-পত্রিকা ও ভিক্টিমদের বর্ণনানুযায়ী দেখা গেছে, গত বছরে মোট ২০টি ঘটনায় ২৭ জন শিক্ষার্থী শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনার মধ্যে মাত্র চারটি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এছাড়া, জোর করে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে ২৬ জনকে এবং তিনজন সাংবাদিককে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হেনস্তা করা হয়েছে।
এছাড়া প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার্থী নির্যাতনের সংখ্যা আরো কয়েকগুণ বেশি। যার অধিকাংশই আড়ালে থেকেই যায়। এমনকি স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট টর্চার (স্যাট) এর বেশ কয়েকজন সদস্যও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতে গিয়ে নির্যাতিত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা জানান, গত ১৯ আগস্ট তারিখে নির্যাতিত এক শিক্ষার্থীকে শাহবাগ থানা থেকে ছাড়িয়ে আনার পথে স্যাটের প্রতিষ্ঠাতা সালেহ উদ্দিন সিফাত ও ডকুমেন্টশন টিমের হেড আহনাফ সাঈদ খান ছাত্রলীগের কতিপয় সদস্যদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হন। চলতি বছরের গতমাসে আমাদের সদস্য তারেক রেজাকে শহীদুল্লাহ হলে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের মানবাধিকার নিয়ে কাজ করতে স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট টরচার (স্যাট) নামে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ হয়। আত্মপ্রকাশের প্রথম দিনই নির্যাতনের একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছিল সংগঠনটি।