ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে ‘প্রশাসন দর্শক’, লুঙ্গিতে ঢাকা সিসিটিভি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ উপগ্রুপ বিজয়ের দু’টি পক্ষের মধ্যে সন্ধ্যা থেকে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ৬ জন। সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটলেও থামছে না আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। এ সংঘর্ষ চলাকালে লুঙ্গিতে ঢেকে রাখা হয়েছে আশেপাশের সিসিটিভি ক্যামেরা।
শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পৌঁনে ৬টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। শাখা ছাত্রলীগের এ সংঘর্ষে ক্যাম্পাসে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ সংঘর্ষে নীরব দর্শকের ভূমিকায় দেখা গেছে প্রশাসনকে। এতে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, হলগুলোর সামনের সিসিটিভি ক্যামেরা লুঙ্গি দিয়ে পেচিয়ে এখনো থেমে থেমে লাগছে সংঘর্ষ। দুপক্ষের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘোরাঘুরি করছেন। আর নিরাপদে অবস্থানে দর্শকের ভূমিকায় অবস্থান নিয়েছেন প্রক্টরিয়াল বডি এবং পুলিশ। দেখা যাচ্ছে না কার্যকর কোনো পদক্ষেপের।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিকালে সোহরাওয়ার্দী হলের মাঠে খেলছিলেন সাখাওয়াতের অনুসারীরা। সাড়ে ৫টার দিকে আলাওল ও এ এফ রহমান হল থেকে আল আমিনের অনুসারীরা লাঠিসোঠা নিয়ে এসে তাদের ধাওয়া দেয়। এসময় সাখাওয়াতের অনুসারীরা হলে গিয়ে লাঠিসোটা নিয়ে মাঠে ফিরলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
আরও পড়ুন: চবির হলে ছাত্রলীগের তাণ্ডব, ৮ রুমে ভাংচুর
তারা জানান, সংঘর্ষের শুরু থেকে প্রশাসনকে নীরব ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে তারা কোনো ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। শাখা ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে তাদের স্বাভাবিক পরিবেশে বিঘ্ন ঘটছে বলে তারা জানিয়েছেন।
জানতে চাইলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. শহিদুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে আছেন। আমরা দেখছি। সিসি ক্যামেরায় যারা হাত দিয়েছে তাঁদেরও চিহ্নিত করার ব্যবস্থা চলছে।
জানা গেছে, বগিভিত্তিক উপগ্রুপ বিজয়ের অনুসারীরা দুইভাগে বিভক্ত। একপক্ষ আলাওল হল ও স্যার এ এফ রহমান হল এবং অপরপক্ষ সোহরাওয়ার্দী হলে অবস্থান করে। উভয় পক্ষই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ শিপক কৃষ্ণ দেব নাথ বলেন, শুক্রবার বিকেলে কিছু ছেলেপেলে সোহরাওয়ার্দী হলে আক্রমণ করেছিল। তারা আমার কক্ষসহ মোট ৮টা কক্ষ ভাঙচুর করেছে।
ভাঙচুর হওয়া কক্ষগুলোতে থাকেন সাখাওয়াত হোসেনের অনুসারীরা। সাখাওয়াত বলেন, মূলত এখানে হলের টেন্ডারের টাকা নিয়ে জুনিয়রদের উসকানি দেওয়া হচ্ছে। আজ সোহরাওয়ার্দীর মাঠে জুনিয়ররা খেলার সময় তারা (আল আমিনের অনুসারীরা) কেন্দ্রীয় মসজিদের দিক থেকে অতর্কিত হামলা করে।
এ বিষয়ে জানতে বিজয় গ্রুপের আরেক পক্ষের নেতা আল আমিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।