শিক্ষার্থী নির্যাতনকারী ছাত্রলীগ নেতারা হলে থাকেন অবৈধভাবে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে অভিযুক্ত হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকই হলে থাকেন অবৈধভাবে। তারা দুজনসহ অন্তত ৭০ জনের বেশি নেতা-কর্মীর হল কোন আস বরাদ্দ নেই। তার অবৈধভাবে হলের কক্ষ দখল করে থাকছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হল সূত্রে জানা গেছে, হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নিয়াজ মোর্শেদ হলের ৩২৭ নম্বর কক্ষে এবং সাধারণ সম্পাদক হলের ৩৭৬ নম্বর কক্ষে থাকেন। এই হলে কৃষ্ণ রায় নামের এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাইম আলীর বিরুদ্ধে। মারধরের পর ওই শিক্ষার্থীকে শিবির ট্যাগ দিয়ে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়।
অভিযোগ ওঠার পর খোঁজ নিয়ে জানা যায় অভিযুক্তরাই হলে অবৈধভাবে আছেন। কক্ষ দখলের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, তারা বৈধভাবে সিট পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু প্রাধ্যক্ষ ছাত্রলীগকে হলে সিট বরাদ্দ দিচ্ছেন না।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাইম আলী বলেন, এই প্রাধ্যক্ষ বিএনপিপন্থী। তিনি ছাত্রলীগকে সিট বরাদ্দ দেন না। তিনিসহ ৫০ জনের বেশি হলে সিট পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু তিনি সিট দিচ্ছেন না।
হল ছাত্রলীগের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, তিনি ইতিমধ্যে হলে সিট পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। এ নিয়ে হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে কথাও হয়েছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে বৈবাহিক অবস্থা লিখতে বাধ্য করা যাবে না।
হল প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাই মাসে হল প্রশাসন সিট বরাদ্দ দেয়। সে সময় ৪৪ জনকে হলে তোলার চেষ্টা করে প্রশাসন। তবে ছাত্রলীগের বাধা উপেক্ষা করে ২০ শিক্ষার্থীকে হলে সিট দিতে পারে প্রশাসন। এবারও হল প্রশাসন আসন বরাদ্দের নোটিশ দিয়েছে। হলে ইতিমধ্যে ১১৭টি সিট খালি হয়েছে। তবে সেগুলোর বেশির ভাগই ছাত্রলীগের দখলে রয়েছে।
উল্লেখ্য, সোহরাওয়ার্দী হলের ৩৮৩ নম্বর রুমে থাকেন কৃষ্ণ রায়। গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে তার কক্ষে আসেন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলামের ৭-৮ জন অনুসারী। এ সময় তাকে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন ছাত্রলীগের নেতারা। কিন্তু কৃষ্ণ বের হতে রাজি না হলে তার বিছানাপত্র ফেলে দিয়ে আরেকজনকে তুলে দেওয়া হয়। এরপর হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলামের কক্ষে নিয়ে তাকে মারধর করা হয়।
এ ঘটনায় গতকাল বুধবার বিকেলে হল থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।