রাবির মাস্টার প্লানে ৩৬টি বিশেষায়িত গবেষণা কেন্দ্রের রূপরেখা
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:৪৫ PM , আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:৪৫ PM
৫০ বছর মেয়াদী একাডেমিক মাস্টার প্লান তৈরি করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন। এর মধ্যে ৩৬টি বিশেষায়িত গবেষণা কেন্দ্রের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। এর বাইরে দুটি জাদুঘর, একটি নাট্য ও প্রদর্শন মঞ্চ, একটি মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা কেন্দ্র, একটি গ্রাজুয়েট ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
মাস্টার প্লান পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গবেষণা কেন্দ্রগুলোর মধ্যে বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণার জন্য সবচেয়ে বেশি ১২টি গবেষণাকেন্দ্র স্থান পেয়েছে। এছাড়া কলা ও মানবিক বিষয়ক গবেষণার জন্য ৮টি। সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণার জন্য ৪টি। কৃষি বিষয়ক গবেষণার জন্য ৫টি। পরিবেশ ও ভূতত্ত্ব সম্পর্কিত গবেষণার জন্য ৫টি এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণার জন্য ১টি গবেষণা সেন্টারের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে।
বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণাকেন্দ্রের মধ্যে আছে নিউক্লিয়ার গবেষণা কেন্দ্র, হাই-পারফর্মেন্স কম্পিউটিং সেন্টার, ন্যানোটেকনোলজি ইনস্টিটিউট, প্লাজমা সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট, জৈব-ধাতব রসায়ন রিসার্চ সৈন্টার, পলিমার রিসার্চ সেন্টার, কম্পিউটিশনাল রসায়ন গবেষণা কেন্দ্র, ডেটা সায়েন্সেস রিসার্চ সেন্টার, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কেন্দ্র (এআই) এবং রোবোটিক্স, অ্যাডভান্সড বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টার, বায়োটেক গবেষণা কেন্দ্র, ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি।
অন্যদিকে কলা ও মানবিক বিষয়ক গবেষণাকেন্দ্রের মধ্যে আছে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা, সংস্কৃতি ও গবেষণা কেন্দ্র, রবীন্দ্র-নজরুল গবেষণা কেন্দ্র, বরেন্দ্র উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র, মানববিদ্যা গবেষণা কেন্দ্র, চারুকলা অনুশীলন কেন্দ্র, ইসলামি গবেষণা কেন্দ্র, সেন্টার ফর এথিকস, বহুমুখী দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র।
সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা সেন্টারের মধ্যে আছে মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিসার্চ সেন্টার, আচরণগত এবং পরীক্ষামূলক সামাজিক গবেষণা কেন্দ্র, উন্নয়ন, জনপ্রশাসন ও জননীতি কেন্দ্র, সেন্টার ফর সোশ্যাল ইনোভেশন অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি।
কৃষি বিষয়ক গবেষণা সেন্টারের মধ্যে আছে জলজ সম্পদ কেন্দ্র, মাৎস্য স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ডেইরি ফার্ম ও পোল্ট্রি ফার্ম, ভেটেরিনারি হাসপাতাল ও গবেষণা কেন্দ্র, কৃষিবিদ্যা ইনস্টিটিউট।
পরিবেশ ও ভূতত্ত্ব বিষয়ক গবেষণাকেন্দ্রের মধ্যে আছে জীববৈচিত্র্য গবেষণা কেন্দ্র ও প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘর, জলবায়ু পরিবর্তন শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র, ভূ-তাত্ত্বিক ও ভূ-প্রকৌশল গবেষণা কেন্দ্র, ভূ-তাত্ত্বিক ও খনিজ সম্পদ আরকাইভস, ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র, ন্যাচারাল প্রোডাক্ট রিসার্চ সেন্টার।
এছাড়া মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সেন্টার ফর অটিজম এন্ড নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার নামে গবেষণা কেন্দ্রের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে।
মাস্টার প্লানটি প্রণয়নে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বাংলাদেশে কর্মক্ষম জনশক্তির প্রাচুর্য, আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সংযোগ, জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র ও দূষণ, যোগাযোগ প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতিতে বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের সম্পৃক্তি, জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার প্রায়োগিক দিক, মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ, টেকসই উন্নয়ন-দর্শন, উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার আন্তর্জাতিক মান এই ৮টি বিষয় বিবেচনায় রেখেছে প্রণয়ন কমিটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১৫তম সিন্ডিকেট সভায় এই মাস্টার প্লানটি পাশ হয়। মাস্টার প্লানটি প্রস্তুত করতে ১৭ জন ও প্রণয়ণে ৯ জনের মোট দুইটি কমিটি কাজ করে।
যেসব গবেষণাকেন্দ্রের রূপরেখা উল্লেখ আছে তার বড় অংশ বিজ্ঞান বিষয়ক হওয়ায় উল্লিখিত কিছু গবেষণা কেন্দ্র বাস্তবায়নে যদি ৪ দশক পার হয়ে যায়, তাহলে ওই সময়ের প্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট ওই গবেষণা ক্ষেত্রের আবেদন হারাতে পারে। ফিজিবিলিট নাও থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, এটি একটি বেইজ মাস্টার প্লান। একটি দীর্ঘ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার অগ্রগতির কথা মাথায় রেখে এটি তৈরি করা হয়েছে। তবে প্রতি ৫ বছর পরপর আমরা এটি রিফাইন করবো এবং উল্লিখিত গবেষণাকেন্দ্রগুলো আরও ভালোভাবে কিভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে পর্যালোচনা করবো।
পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল আছে কিনা এমন প্রশ্নে উপাচার্য বলেন, আমাদের দক্ষ শিক্ষক আছেন। উনারা শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এইসব গবেষণাকেন্দ্রগুলো পরিচালনা করার মতো দক্ষ জনবল তৈরি করবেন। যারা বিশ্ব গবেষণায় নেতৃত্ব দিবে বলে আমি বিশ্বাস করি।