১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:১৯

রাবিতে নির্যাতনের পর ‘শিবির ট্যাগ’ দিয়ে হিন্দু ছাত্রকে হত্যার হুমকি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কৃষ্ণ রায় নামের এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। মারধরের পর ওই শিক্ষার্থীকে শিবির ট্যাগ দিয়ে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাবির শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার  (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিষয়টি জানাজানি হয়।

ভুক্তভোগী কৃষ্ণ রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা হলেন, সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সোলাইমান।

জানা যায়, সোহরাওয়ার্দী হলের ৩৮৩ নম্বর রুমে থাকেন কৃষ্ণ রায়। গত রোববার রাতে তার কক্ষে আসেন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলামের ৭-৮ জন অনুসারী। এ সময় তাকে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন ছাত্রলীগের নেতারা। কিন্তু কৃষ্ণ বের হতে রাজি না হলে তার বিছানাপত্র ফেলে দিয়ে আরেকজনকে তুলে দেওয়া হয়। এরপর হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলামের কক্ষে নিয়ে তাকে মারধর করা হয়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী কৃষ্ণ রায় বলেন, আমি রাতে পড়ালেখা করছিলাম। হঠাৎ তারা কক্ষে এসে আমার বিছানাপত্র ফেলে দেন এবং বের হয়ে যেতে বলেন। আমি বের না হয়ে চেয়ারে বসে থাকি। এসময় সোলাইমান নামের এক ছাত্রলীগ নেতা আমাকে মারধর করেন।

ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, পরে আমাকে জোর করে নাঈম ইসলামের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমাকে ‘ম্যানারের’ (আচরণ) অজুহাতে কান ধরতে বলেন। কান ধরতে না চাইলে তারা আবারও আমাকে মারধর করেন। এসময় নাঈম বলে, ‘তোকে মেরে শিবির ট্যাগ দিয়ে দেব।’ কিন্তু আমি হিন্দু জানার পর বলে, ‘এখন তো তোকে মেরে ফেললেও কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না।’ 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা নাঈম ইসলাম। তিনি বলেন, ওই শিক্ষার্থীর সিট নিয়ে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। কথা কাটাকাটি হয়েছিল। পরে সমাধান করে দিয়েছি।

জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,  হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কক্ষে কক্ষে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। গার্ডের কাছে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি। আরও খোঁজ খবর নিয়ে খুব দ্রুতই পদক্ষেপ নেব।