পরিবেশ রক্ষায় সেন্টমার্টিনে রাবি শিক্ষার্থীদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাজকর্ম বিভাগের এমএসএস ২০২১-২২ (নান্দনিক'৫৪) ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন্স রক্ষায় স্থানীয় জনগণ ও পর্যটকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করেছে। তাদের প্রতিপাদ্যে ছিল ''সেন্টমার্টিন বাঁচান, পরিবেশ রক্ষা করুন''।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টায় দ্বীপের জেটি ঘাট সংলগ্ন সৈকতের উত্তর ও দক্ষিণ অংশে এই অভিযান পরিচালনা করেন শিক্ষা সফরে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।
পথ-সভা শেষে সৈকতে পড়ে থাকা ও সাগর থেকে ভেসে আসা পলিথিন ব্যাগ, প্লাস্টিকের বোতলসহ পরিবেশ দূষণকারী নানান বর্জ্য সংগ্রহ করে জেটি ঘাটের পাশে কোস্ট-গার্ডের নির্ধারিত বর্জ্য সংগ্রহ স্থানে রাখেন।
বিভাগীয় শিক্ষা-সফরের অংশ হিসেবে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে এসে তারা এই কর্মসূচি পরিচালনা করেন। এতে তত্ত্বাবধান করেন বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. শাহীদুর রহমান চৌধুরী (গোলাপ)।
পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনার অংশ হিসেবে প্রথমে তারা জেটি সৈকত বাজারে পথসভা করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন টেকনাফ থানার পুলিশ পরিদর্শক সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্য, সেন্টমার্টিন সংশ্লিষ্ট ইউএনডিপির প্রকল্প 'আমার সেন্টমার্টিন্স, 'আমার দ্বীপ, আমার দেশ' এর নির্বাহী সদস্য মো. হাবিবুর রহমান, সমন্বয়ক মো: কামাল উদ্দিন, বর্জ্য সংগ্রাহকারী কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান ও নূরুল কাদের, টুরিস্ট পুলিশ, কোস্ট-গার্ড সদস্যবৃন্দ ও স্থানীয় জনগণ।
এসময় অধ্যাপক শাহিদুর রহমান চৌধুরী বলেন, সৈকতে পড়ে থাকা পলিথিনের ব্যাগ আর প্লাস্টিকের বোতল কুড়ানোর মধ্য দিয়েই সেন্টমার্টিন্সকে বাঁচানো সম্ভব না। সেন্টমার্টিন্সকে রক্ষার্থে দ্বীপের স্থানীয় জনগণ, হোটেল মালিক, ট্যুর অপারেটর ও জাহাজ মালিক সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে ও সচেতন হতে হবে।
আরও পড়ুন: ভালোবাসার ফুল বিক্রির টাকায় হবে রাবি ছাত্রী প্রীতির চিকিৎসা
এছাড়াও সেন্টমার্টিন্স রক্ষায় প্রতিবেশ ও পরিবেশ বান্ধব পর্যটনের জন্য সরকার থেকে শুরু করে স্থানীয় জনগোষ্ঠী, স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, এনজিও, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও দায়িত্বশীল মিডিয়ার ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল সমৃদ্ধ দ্বীপ ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি সেন্টমার্টিন্স দ্বীপ বর্তমানে প্রতিবেশগত-ভাবে নাজুক অবস্থায় উপনীত হয়েছে।
এই দ্বীপটিকে সুচিন্তিতভাবে সংরক্ষণের আওতায় আনা না গেলে এর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেতে পারে। সেই সাথে কমিউনিটি ভিত্তিক ট্যুরিজম ফলপ্রসূ করতে হলে সে বিষয়ে যথেষ্ট গবেষণা ও সমীক্ষা সম্পন্ন করা অতীব জরুরি। অন্যথায় আমাদের পরিবেশ পড়বে মারাত্মক হুমকির মুখে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এমন নান্দনিক উদ্যোগের প্রশংসা করে পুলিশ পরিদর্শক সুদীপ্ত শেখর বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা যদি সচেতনতার সাথে এমন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোগ গ্রহণ করেন তাহলে খুব সহজেই এই প্রবালদ্বীপকে আরও পরিবেশ-বান্ধব করা সম্ভব।