রাবিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হামলায় জড়িতদের শাস্তির দাবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ফোকলোর বিভাগের নবীন বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানে আকস্মিক হামলা ও শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে অত্র বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রোববার (১২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী একাডেমিক ভবনের সামনে তারা এই মানববন্ধন করেন।
ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম কণকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রওশন জাহিদ বলেন, গতকালের ঘটনার আমরা খুবই মর্মাহত। আমাদের বক্তৃতা পর্ব শেষ হওয়ার পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী ভাংচুরের ঘটনা ঘটায়। এই চক্রের সাথে যারা যুক্ত আছে তারা আমাদের অসাম্প্রদায়িকতাকে পণ্ড করতে চায়। আমরা তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি ।
অধ্যাপক সুস্মিতা চক্রবর্তী বলেন, আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে বলেই আমরা আজ এখানে দাঁড়িয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা জায়গায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হামলা চালানোর মতো নিকৃষ্ট কাজ হতে পারে না। তারা অবশ্যই কোনো ক্ষমতায় আছে। গতকাল আমাদের বিভাগে হয়েছে এখন অন্য বিভাগেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে। এই ঘটনার শাস্তির আওতায় আনলে তারা ভবিষ্যতে এধরনের ঘটনায় জড়িত হতে সাহস পাবে না।
ফোকলোর বিভাগের সভাপতি ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থীরা গতকাল আমাদের নবীন বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানে তারা প্রচুর ভাংচুর করেছে। তারা শিক্ষকদের সাথেও অসদাচরণ করেছে। তাদের শাস্তির আওতায় না আনা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করবো। বিশ্ববিদ্যালয় কারো বাবার সম্পদ নয় যে যার মতো আচরণ করবে। আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করছি তাদের অতিদ্রুত চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হোক।
তিনি আরও বলেন, অচিরেই একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক। এর সাথে কোনো শিক্ষক কিংবা ছাত্র সংগঠনও জড়িত থাকতে পারে। আমরা প্রতিনিয়ত দেখতে পাই তদন্ত কমিটি হয় কিন্তু তার কোনো সুষ্ঠু রিপোর্ট পাওয়া যায় না। আমাদের গণতান্ত্রিক দেশে এটা কখনো হতে পারে না। তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হোক।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ড. মোস্তাফা তরিকুল আহসান, ড. মোবাররা সিদ্দিকা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ড. এস.এম একরাম-উল্লাহ। মানববন্ধনে বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের প্রায় দু-শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, গতকাল শনিবার ফোকলোর বিভাগের ১৯শ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বিদায় এবং নবাগত ২৪শ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বরণ উপলক্ষে আলোচনাসভা ও এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার পূর্বমুহূর্তে কিছু ছাত্র মাঝখানে হট্টগোল এবং চেয়ার ছুঁড়তে ও ভাঙতে শুরু করে।