বঙ্গবন্ধু ফিরে না আসলে আমরা এতিম হয়ে যেতাম: রাবি উপাচার্য
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা পায়। তিনি ফিরে না আসলে আমরা এতিম হয়ে যেতাম। বঙ্গবন্ধু বাংলার লোকায়ত দর্শনকে ধারণ করতেন। তিনি যে রাষ্ট্রের ঘোষণা করেছিলেন তার ভিত্তি ছিল ভাষা, ধর্ম নয়। ভাষা ধর্ম নিরপেক্ষ হওয়ায় এর অসাধারণ শক্তি আছে। বঙ্গবন্ধু এ কারণে ভাষাকে রাষ্ট্রের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর রাজনৈতিক দর্শনকে নিয়ে আরো গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাবির শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির বলেন, ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে চিন্তা করতেন, ভাইয়ের মতো করে দেখতেন। ভারতের প্রত্যক্ষ সহায়তা না পেলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আরো দীর্ঘায়িত হতো। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পর আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশকে বাস্তবে রূপ দান করতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় হয়ে উঠবে আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় হোক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের শপথ।
অনুষ্ঠানে রাবির ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মো. আবুল কাশেম বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বদেশে ফিরে সংবিধান প্রণয়ন কমিটি গঠন করেছিলেন এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূল নীতি তিনি ঘোষণা করেন। ভাষা ও সংস্কৃতিকেন্দ্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় তিনি দৃঢ় অবস্থান নেন। বঙ্গবন্ধু জোট নিরপেক্ষতাবাদে বিশ্বাস করতেন। স্বাধীন বাংলাদেশকে তিনি কমনওয়েলথের সদস্য পদে আসীন করেন। মুক্ত বাংলাদেশে ফিরে এসে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারে তাঁর পদক্ষেপ ছিল অন্যতম কূটনৈতিক সাফল্য।
এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা বলেন, আমরা চর্যাপদে প্রথম বাঙালি শব্দটি পেয়েছিলাম। কিন্তু এই বাঙালিকে পরিচিত করার স্বার্থক প্রয়াস নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। শুধু বাঙালি হওয়া নয়, মানুষ হবার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু সমাজতন্ত্র চেয়েছিলেন যাতে করে আপামর জনগোষ্ঠী অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, মত প্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করা যায়। একটি রাষ্ট্র কাঠামোতে সকল ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে এক কাতারে নিয়ে আসার স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. অবায়দুর রহমান প্রামানিক, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, ছাত্র উপদেষ্টা এম. তারেক নূর, অনুষদ অধিকর্তা, ইনস্টিটিউট পরিচালক, বিভাগীয় সভাপতি, হল প্রাধ্যক্ষসহ শিক্ষক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।