০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:১৬

৫ মাসে ১২ বার সংঘর্ষ চবি ছাত্রলীগের, নীরব প্রশাসন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখা ছাত্রলীগের দু'পক্ষের সংঘর্ষ  © ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদালয় এখন উত্তাল। ট্রেনের সিটে কিংবা তুচ্ছ বিষয়ে দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন আর মারামারি এখন যেন প্রতিদিনের কাজে পরিণত হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মানছে না কাউকেই। পুলিশের সামনেই রামদা হাতে করে শোডাউন। প্রক্টোরিয়াল বডির সামনেই হকি-স্ট্যাম্প নিয়ে মারমুখী আচরণ নেতা-কর্মীদের। মারামারি থামাতে এসে লাঞ্চিত হন শিক্ষকরাও। চবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে গত ৫ মাসে ১২ বার সংঘর্ষের অভিযোগ থাকলেও প্রশাসন নীরব। 

গতকাল (৭ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের সিটকে কেন্দ্র করে ফের সংঘর্ষে জড়িয়েছে শাখা ছাত্রলীগের দুইটি গ্রুপ। এই সংঘর্ষের খবর জানতে পেরে সমাধান করতে আসা সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলামও  আহত হয়েছেন ইটপাটকেলের আঘাতে।  

এ বিষয়ে চবির প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, সংঘর্ষের বেশির ভাগ ঘটনা তাঁরা এখনও তদন্ত করছেন। কিছু দিক বিবেচনায় কয়েকজনকে ক্ষমা করা হয়েছে।  

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয় গত বছরের জুলাই মাসে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ১২ বার ছাত্রলীগের বিভিন্ন উপপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ৫৬ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন৷
 
গতমাসে ডিসেম্বরের ২ তারিখ রাতে দেয়ালে চিকা মারা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল দুটি উপপক্ষ। এসময় রামদা উঁচিয়ে স্লোগান দেয় শাখা ছাত্রলীগের উপপক্ষ বিজয়ের নেতা-কর্মীরা। দা হাতে এই ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এছাড়া শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার দিনও ক্যাম্পাস অবরোধ করে ক্ষমতাসীন দলের এ সংগঠনটি। এতে বন্ধ হয়ে যায় ২১ পরীক্ষা।  

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন জানায়, সামান্য বিষয় নিয়ে মারামারির ঘটনাগুলো নেতা-কর্মীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সেরে ফেলেন। তবে এখন বিষয়গুলো আমলে নিয়েছেন৷ এ বিষয়ে তাঁরা এখন আরও কঠোর অবস্থান নেবেন।

আরও পড়ুন: একদিনের ব্যবধানে চবিতে ফের ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ

এমন ঘটনার কারণ দর্শিয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক জানান,  এমন ঘটনা বারবার ঘটার কারণ বগিভিত্তিক সংগঠন। তাঁরা ছাত্রলীগের বাইরে অন্য কোনো বগির নাম ব্যবহার না করার কথা নেতা-কর্মীদের জানিয়েছেন।

তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি শাখা ছাত্রলীগের এমন ঘটনাগুলোতে। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই রেজাউল হককে সভাপতি ও ইকবাল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যর কমিটি করা হয়। এ সময় থেকে  শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন উপপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে ১০০ বারের উপরে। এর মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে মাত্র দুটি৷ 

অবশ্য দুইটি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রলীগের ১২ কর্মীকে একবছর মেয়াদ পর্যন্তও বহিষ্কার করে। তবে এর পরে মানবিক দিক বিবেচনায় সাতজনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।

শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি এমদাদুল হক ছাত্রলীগের এ ধরনের কর্মকাণ্ড শিক্ষার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মন্তব্য করেছেন ৷  তিনি বলেন, আবাসিক হলের নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের হাতে নেই।