১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ২৩:১২

‘আমাদের মরণ ছাড়া কোনো উপায় নেই’

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন  © টিডিসি ফটো

‘আজ নয় বছর ধরে চাকরি করছি। এখনো পর্যন্ত চাকরি স্থায়ী হয়নি। দৈনিক ৪শত টাকা মুজুরি পাই। হাজিরা দিলে পাই, না দিলে পাই না। এই টাকা দিয়ে সংসার চলে না। ছেলে-মেয়ে পড়াশোনা করাতে পারি না। আমাদের চাকরি স্থায়ী না হলে, আমাদের মরা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।’

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অস্থায়ী কর্মচারীরা চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে আক্ষেপের সূরে কথাগুলো বলছিলেন  শেখ হাসিনা হলের মালি শরিফুল ইসলাম।

আরেক কর্মচারী শামসুল ইসলাম। তিনি সুফিয়া কামাল হলের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন গত ৭বছর ধরে। এখনো চাকরি স্থায়ী হয়নি। এই কর্মচারী জানান, ‘দৈনিক ৪শত টাকা মুজুরি দিয়ে চাকরি করছি। বউ-সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করে যদি সন্তানদের পড়ালেখা করাতে না পারি, তাহলে এর মতো হতভাগা আর কিছু নেই।’

জাহানারা ইমাম হলের পিয়ন নাসরিন আক্তার বলেন, ‘আমরা এর আগেও মানববন্ধন করেছি কিন্তু প্রশাসনের থেকে কোনো উত্তর পাইনি। এখন আমাদের পক্ষে আর ধৈর্য ধরা সম্ভব না। আমাদের জীবনের সাথে অনেকগুলো মানুষ জড়িত‌। আমাদের দুঃখ কাউকে বুঝাতে পারছি না।’

এদিকে তারা বেলা ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করলেও প্রশাসন থেকে মেলেনি কোনো আশ্বাস। কর্মচারীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘সকালে সহকারী প্রক্টর আমাদেরকে জানান “উপাচার্য বরাবর আপনাদের দাবি পৌঁছে গেছে। উনারা ভিতরে আমাদের দাবি নিয়ে মিটিং করছেন। মিটিং শেষে আপনাদেরকে জানাবে।” কিন্তু আমাদের সাথে কেউ এসে কথা বলেননি।’

রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছয় জন ও চতুর্থ শ্রেণির ১৪৯ জন কর্মচারী ‘দৈনিক মজুরি’ ভিত্তিতে কর্মরত আছেন। ইউজিসির অনুমোদন না থাকায় তাদের নিয়োগ স্থায়ী করা সম্ভব হচ্ছে না। ইউজিসির অনুমোদন সাপেক্ষে ধাপে ধাপে তাদের নিয়োগ স্থায়ী করা হবে।

এর আগে গত ২৪ নভেম্বর ও ৫ ডিসেম্বর একই দাবিতে মানববন্ধন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করা হয়। এছাড়াও চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুরিতে একই দাবিতে

মানববন্ধন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকুরী স্থায়ীকরণের আশ্বাস দেন।

চাকরি স্থায়ীকরণের ব্যাপারে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক মো: নূরুল আলমের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।