আধুনিকতার ছোঁয়া রাবি মিলনায়তনে, ব্যয় ১৬ কোটি টাকা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সবচেয়ে বড় প্রেক্ষাগৃহ কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনকে আধুনিকায়ন করতে ব্যয় করা হয়েছে ১৬ কোটি টাকা। এতে থাকছে উন্নত মানের টাইলস, উন্নত মানের চেয়ার, হাই কোয়ালিটি মঞ্চ, উন্নত মানের সোফা, সাউন্ড সিস্টেম, সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশন সহ প্রায় ২২০০ সিট। মিলনায়তনের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। অপেক্ষা শুধু উদ্বোধনের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে রাবির ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ৩৬৩ কোটি টাকার প্রকল্প পাস হয়। পরে বাজেট সংশোধিত হয়ে ২০১৯ সালে ৫শত ১০ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের সংস্কার কাজ। যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৬ কোটি টাকা। দুভাগে বিভক্ত কাজটির এসি ও অ্যাকুস্টিকের কাজ পায় ঢাকা প্রিমিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। যার নির্মাণব্যয় ছিল ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। গত বছর এ কাজ শুরু হয়ে ইতোমধ্যে কাজ প্রায় শেষের দিকে।
এ দফতর সূত্রে আরও জানা যায়, মিলনায়তনে এসি বসাতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ৫ কোটি টাকা। অ্যাকুস্টিক, অত্যাধুনিক সম্বলিত সাউন্ড সিস্টেম ও লাইটিংয়ের জন্য খরচ করা হয়েছে প্রায় ৬ কোটি টাকা। অত্যাধুনিক মানের সিভিল, কাঁচের জানালা, উন্নত মানের টাইলস, উন্নত মানের চেয়ার, হাই কোয়ালিটি মঞ্চ, উন্নত মানের সোফাসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদীতে খরচ হয়েছে ৫ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে মিলনায়তন আধুনিকায়নের জন্য ১৬ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
মিলনায়তনের এমন সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল বলেন, এত সুন্দর মিলনায়তন পেয়ে আমরা আনন্দিত। এখন থেকে যে কোনো বড় প্রোগ্রাম করতে আমাদের আর সমস্যায় পড়তে হবে না। উন্নতমানের লাইটিং, সাউন্ড সিস্টেমসহ সব মিলিয়ে দারুণ লাগছে অডিটোরিয়ামটি। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অডিটোরিয়ামে বসে অনুষ্ঠান দেখার সৌভাগ্য আমাদের হচ্ছে। তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান এ শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: ফারদিন নয়, ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরেছে তার ফোন
আইবিএ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো: শাকিল আহমেদ বলেন, আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে রাবি প্রশাসন কাজী নজরুল মিলনায়তনের একটি মনোমুগ্ধকর নতুন রূপ দিয়েছে। সাধারণত ক্যাম্পাসে বেশিরভাগ অনুষ্ঠান এখানে উদযাপিত হয়ে থাকে। আমি মনে করি আধুনিক এই মিলনায়তনের মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অন্যান্য ভার্সিটি থেকে এক ধাপ এগিয়ে গেল। এই জন্য রাবি প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।
মিলনায়তন আধুনিকায়নের কাজের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম। ইতোমধ্যে কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, হয়ত ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা অডিটোরিয়াম উদ্বোধন করতে পারবো। ইতোমধ্যে আমাদের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পেরেছি। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে যত মিলনায়তন আছে তার মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তন হবে অন্যতম এবং দৃষ্টিনন্দন। এ মিলনায়তনকে বিভিন্ন সাজে সজ্জিত করা হয়েছে। উদ্বোধন শেষে যথারীতি শিক্ষার্থীরা প্রোগ্রাম পরিচালনা করতে পারবে বলে জানান এ প্রকৌশলী।
পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক খোন্দকার শাহরিয়ার রহমান বলেন, মিলনায়তনের আধুনিকায়নের সম্পূর্ণ কাজ মার্চের দিকে শেষ হওয়ার কথা ছিলো। তবে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার ফলে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। বাহিরে কিছু রঙের কাজ বাকি আছে। আশা করছি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মিলনায়তনের শতভাগ কাজ শেষ হবে।