জাবি সহকারী প্রক্টর জনির কর্মকান্ড তদন্তের দাবী শিক্ষক ফোরামের
একাধিক অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানো ও শিক্ষক নিয়োগে তদবিরের অভিযোগ উঠা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সহকারী প্রক্টর মাহমুদুর রহমান জনির কর্মকান্ড তদন্তের দাবী জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।
২৬ নভেম্বর রাতে ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ কামরুল আহছান ও সম্পাদক মোহাম্মদ কামরুল আহসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপতিতে তারা এ দাবী জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে অনৈতিক সম্পর্কের প্রভাবের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। বিভাগের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে/ অনৈতিক সম্পর্ক ও অর্থের বিনিময়ে নারী শিক্ষার্থীদের ফলাফল ও নিয়োগে বেআইনি প্রভাব বিস্তার করেছেন বলে প্রকাশ পেয়েছে। এমনকি ওই একই শিক্ষককে ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকা অবস্থায় ক্ষুব্ধ জনতা কর্তৃক প্রহারের শিকার হয়েছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বহুল আলোচিত হয়েছিলো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর এসব ঘটনার অভিযোগসমুহ খতিয়ে দেখতে কোন তদন্ত করা হয়নি মর্মে উল্লেখ করে বিজ্ঞপতিতে বলা হয়, এর মাধ্যমে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যদি মহল বিশেষের কোন অপপ্রচার থাকে তবে তাকে উৎসাহিত করা হয়েছে। অপরদিকে অভিযোগের কোন সত্যতা থাকলে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্য অসম্মানজনক হবার পরও উক্ত শিক্ষককে বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্বে বহাল রেখে অসামাজিক কার্যকলাপের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছে, যার দায় প্রশাসন কোনভাবেই এড়াতে পারে না।
এই কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, এ ধরণের অগ্রহণযোগ্য আচরণের মাধ্যমে শিক্ষকতার মহান পেশায় কালিমা লেপনের পাশাপাশি পুরো দেশের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারকে হেয় করা হয়েছে।
ন্যায় বিচারের স্বার্থে অভিযুক্ত শিক্ষককে সকল প্রকার প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত রেখে অবিলম্বে একটি গ্রহণযোগ্য তদন্ত কমিটি গঠন করে এই অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান ব্যক্ত করার জন্য বিজ্ঞপতিতে উপাচার্য নুরুল আলমকে আহ্বান জানানো হয়।
এ ব্যাপারে ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ কামরুল আহছান বলেন, যদি ওই শিক্ষক দোষী হয়ে থাকে তাহলে তার চাকুরীতে থাকার কোনো যৌক্তিকতা নেই। যদি সে দোষী না হয়েও থাকে তাহলে যারা এই এই কর্মকান্ডের প্রচার করেছে অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এ ঘটনায় প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জাকর ব্যাপার।
উলেখ্য, সম্প্রতি, জনির সাথে ৪২ ব্যাচের ছাত্রী ও সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষিকা আনিকা বুসরা বৈচির সাথে একটি অন্তরঙ্গ ছবি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর দেয়ালে পোস্টারিং করার পর আরো অনৈতিক কার্যক্রমের চিত্র ফাঁস হয়।
মাহমুদুর রহমান জনি ২০১২ সালে জাবি ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ওই কমিটির শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহমেদ রাসেল বলেন, ‘জনির এধরনের ঘটনার সাথে জড়িত থাকা ছাত্রলীগের জন্য বিব্রতকর। এটা নৈতিকতার চরম অবক্ষয়। এগুলো সত্য প্রমানিত হলে তার শাস্তি হওয়া উচিত।’