‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর পরই আপনাকে একটি লক্ষ্য ঠিক করতে হবে’
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২২, ০৮:১৯ PM , আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২২, ০৮:১৯ PM
রাবি নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এস. এম. সানজিদ রহমান বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর পরই আপনাকে একটি লক্ষ্য ঠিক করে নিতে হবে। মাস্টার্স শেষ করে বা পড়ালেখা শেষ করে ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবনা চিন্তা করলে আপনারা অনেক পিছিয়ে যাবেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট, হায়ার স্টাডি এবং স্কলারশিপ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের কমন রুমে হল প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সেমিনারের মূলপর্বে অতিথিরা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রাবন্ধিকগণ তাদের উপস্থাপনায় জ্ঞান চর্চার পাশাপাশি নতুন জ্ঞান সৃষ্টির জন্য শিক্ষার্থীদের দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত রাখার আহ্বান জানান। এছাড়াও তাঁরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং বিশ্বায়নের এই যুগে প্রথাগত ক্যারিয়ার ভাবনা থেকে বেরিয়ে নিত্য নতুন আইডিয়া ও পেশা নির্ভর ক্যারিয়ার গড়ার জন্য প্রস্তুত হতে পরামর্শ দেন।
আরও পড়ুন: বিজ্ঞানের ল্যাব নেই ৩০ শতাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে
সেমিনারে ৪০ তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত আবাসিক শিক্ষার্থী গোলাম মাওলা বলেন, শুরুর দিকে যাত্রাটা সহজ ছিলো না। আপনাকে একটা নির্ধারিত লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। সেই অনুযায়ী পরিশ্রম করতে হবে। পরিশ্রম টা হতে হবে সঠিক এবং পরিকল্পনা মাফিক। নিজের পছন্দের জায়গা টাকে প্রাধান্য দিতে হবে। আপনি যেটাই করেন আপনার ডেডিকেশন টা হতে হবে উঁচু লেভেলের। আপনার একাডেমিক রেজাল্ট টা মাথায় রাখতে হবে। সঠিক পরিকল্পনা, মেধা, পরিশ্রম আপনাকে নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে। পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই।
হল প্রাধ্যক্ষ ড. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার এর সহকারী পরিচালক ড. জান্নাতুল কোবরা মনিরা, অফিস অফ দ্যা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স এর সহকারী পরিচালক ড. শামস মুহাম্মদ গালিব, ৪০ তম বিসিএস এর প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত আতিকুর রহমান, শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত গোলাম মাওলা এবং হলের আবাসিক শিক্ষক এস এম সানজিদ রহমান উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে হল প্রাধ্যক্ষ ড. হাবিবুর রহমান বলেন, বিসিএস চাকরির বাইরেও যে নিজের সৃজনশীলতা ও মেধা দিয়ে দেশে-বিদেশে ক্যারিয়ার গড়ার বিভিন্ন উপায় রয়েছে, মূলত সেসবের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেই এই ধরনের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া এ ধরণের আয়োজন শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস জীবনের গড্ডালিকা প্রবাহের সংস্কৃতি থেকে বেড়িয়ে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেকে প্রতিশ্রুতিশীল হিসেবে গড়ে তুলবে সহায়তা করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে হলের হাউজ টিউটর এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এস. এম. সানজিদ রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর পরই আপনাকে একটি লক্ষ্য ঠিক করে নিতে হবে। মাস্টার্স শেষ করে বা পড়ালেখা শেষ করে ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবনা চিন্তা করলে আপনারা অনেক পিছিয়ে যাবেন। হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে পরবেন। আমরা সকলেই জানি সরকারি চাকুরীতে অনেক নিরাপত্তা রয়েছে। সেকারণে চাকরি ক্ষেত্রে পছন্দের তালিকায় সকলেরই সরকারি চাকুরী প্রথমে অবস্থান করে। যার মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করে বিসিএস।
তিনি আরও বলেন, বিসিএস মূলত ধৈর্যশীল মেধাবী এবং পরিশ্রমীদের জন্য। যেটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফসল। তারপরেও সিট সংখ্যা কম। ভাগ্য আরেকটি ব্যাপার। যাদের বিসিএস লক্ষ্য তাদের উচিত হবে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করা। শুধু বিসিএস লক্ষ্য করে এগিয়ে যাওয়াটাও বোকামি। পাশাপাশি অন্য সেক্টরে কাজের জন্যও প্রস্তুতি রাখতে হবে। তাহলে আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। মূল কথা হচ্ছে আপনাদের স্কিল বাড়াতে হবে। তাহলে কোথাও না কোথাও আপনি চাকরির সুযোগ হবে। আর সরকারী চাকরিতে ইংরেজি গণিতে পারদর্শী হওয়া জরুরি। পাশাপাশি একাডেমিক রেজাল্টটা ভালো করতে হবে।
উক্ত সেমিনারে হল প্রশাসনের কর্মকর্তারাসহ ৭০ জনের বেশি আবাসিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।