রড দিয়ে পিটিয়ে ঢাবি শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে পাঠালো ছাত্রলীগ কর্মী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের এক কর্মীর বিরুদ্ধে রড দিয়ে শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের ফলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাসেল মাহমুদকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) রাতে ঢাবির বিজয় একাত্তর হলের যমুনা ১১০০১ নং কক্ষে রাসেল মাহমুদ নামে এক শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হন।
জানা যায়, অভিযুক্ত মোনাফ প্রান্ত ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী। সে হল ছাত্রলীগের কার্য-নির্বাহী সদস্য এবং হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনুসের অনুসারী।
ভুক্তভোগী জানায়, ‘আমাদের আজকে রুম শিফট হওয়ার কথা ছিল। এজন্য আমি রুমে আসি এবং এসে দেখি প্রান্ত আমার রুমে এসে শুয়ে আছে। আর আমার ল্যাপটপসহ সমস্ত জিনিসপত্র বাইরে বের করে রাখছে। তখন আমি বলি, আমার জিনিসপত্র তো বাইরে বের করলি। এটলিস্ট আমাকে তো জানাতে পারতি। তখন প্রান্ত এগ্রেসিভলি বলতেছে তোরা বিষয়টা জানিস না? এবং আমাকে আমার মা তুলে বাজেভাবে গালি দেয় এবং বলে রুম থেকে এখনই বের হ। তখন আমি বলি, আমার সাথে এরকম আচরণ করছিস কেন? আমি কী তোর জুনিয়র হই? সেসময় আমার আরেক বন্ধু আসে। তাকেও মা নিয়ে গালিগালাজ করে বলে তাড়াতাড়ি সবাই রুম থেকে বের হ। নাইলে খবর আছে। তখন আমি বলি, খবর আছে এসব বলার মানে কী? তখন একপর্যায়ে প্রান্ত রড নিয়ে এসে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করছে। আমার পিঠে মারাত্মকভাবে জখম দাগ রয়েছে। হাত দিয়ে ফিরানো সময় হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হই।’
শিক্ষার্থীরা জানান, ‘প্রান্ত রুমে এসে রাসেলের সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে হাতের কাছে রড পেয়ে তা দিয়ে রাসেলকে মারধর করে। মুখে থাপ্পড় দেয়। মারধরের কারণে রাসেল তার কোমরে আঘাত পায়। পরে ঢাকা মেডিক্যাল গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয় রাসেল।’
শিক্ষার্থীরা আরো জানান, ‘প্রান্ত খুবই উগ্র মেজাজের ছেলে। প্রায়ই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বন্ধুদের সাথে ঝগড়া করে। জুনিয়রদেরও মারধর করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গভীর রাতে জুনিয়রদের রুমে গিয়ে ঘুম থেকে উঠিয়ে গালাগালি করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।’
তবে মারধরের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী মোনাফ প্রান্ত। তিনি বলেন, ‘এরকম কোন কিছুই হয়নি। রাসেল আমার বন্ধু হয়। রুম নিয়ে জাস্ট একটু তর্কাতর্কি হয়েছে। পরে সিনিয়র ভাইরা এসে সমাধান করে দিছে।’
এ বিষয়ে হল ছাত্রলীগের সভাপতি সজীবুর রহমান সজীবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনুসকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা তাদের দুই জনের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব। তিনি আরও বলেন হল ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং বাকিটা হল প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে। অভিযুক্ত প্রান্ত একাত্তর হল ছাত্রলীগের সদস্য হওয়ায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন সাংগঠনিক কাঠাম থেকে যতটুকু সম্ভব ব্যবস্থা নিবেন।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট প্রফেসর আব্দুল বাছিরকে বলেন, ‘কেও এখনও তার কাছে অভিযোগ করেন নি এ বিষয়ে। লিখিত অভিযোগ পেলে তিনি পূর্বের মত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিবেন।’