রাবি ছাত্রের মৃত্যু: রামেক চত্বরে আন্দোলন
চিকিৎসা অবহেলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শাহরিয়ারের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মেডিকেল চত্বরে আন্দোলন করছেন তারা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গুরুতর অবস্থায় শাহরিয়ারকে হাসপাতালে নেয়া হলে দায়িত্বরতরা তাদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্যের স্বাক্ষরসহ বিভিন্ন কাগজপত্র চেয়ে বসে। এছাড়া তাৎক্ষণিক চিকিৎসা শুরু না করে বিভিন্ন নিয়ম মানতে বাধ্য করা হয়। এতে করে কালক্ষেপণ হওয়ায় ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
তারা বলেন, এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে হাসপাতালের স্টাফদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করে হাসপাতালে স্টাফরা। তারা এখন চিকিৎসারত অবস্থায় রয়েছেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানাই।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, আমরা ঝামেলাটা থামানোর চেষ্টা করছি। এরপর যারা দোষী, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন সবার মাথা গরম। ছাত্র মারা যাওয়ার ইস্যুটার থেকে কে, কাকে, কেনো মারলো সেটাই বড় ইস্যু হয়ে দাড়িয়েছে। এখন আমাদের মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা দুপক্ষকেই শান্ত থাকার জন্য বলছি।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাঝে দাঁড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নুর বলেন, অবহেলার কারণে কেন আমাদের শিক্ষার্থী মারা গেল এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের মারধর করা হলো। এগুলোর বিচার করতে হবে।
এদিকে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের নিরাপত্তার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে মেডিকেলের সকল কর্তব্যরত ইন্টারনেট চিকিৎসকেরা একযোগে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন। এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি, হাসপাতালে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তাঁদের নিরাপত্তা দিতে হবে। এ দাবিতে রাত ১২টার দিকে তাঁরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে গেছেন।
এর আগে, বুধবার রাত ৮টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের উপরতলার রেলিং থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন শাহরিয়ার নামের এক আবাসিক ছাত্র। পরে রাত ৯টার দিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে মেডিকেলে নিয়ে ৯টার দিকে হাসপাতালের ৮নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
শাহরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি ওই হলের ৩৫৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলায়।