ঢাবির মুহসিন হলে ছাত্রলীগের কাণ্ডে তদন্ত কমিটি গঠন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মাদ মুহসীন হলে বৈধ শিক্ষার্থীকে মারধর ও কক্ষ দখলের চেষ্টা এবং সাংবাদিক হেনস্থার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হল প্রশাসনের গঠিত তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে। হলের আবাসিক শিক্ষক সহযোগী অধ্যাপক আইনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রাধ্যক্ষ তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আবাসিক শিক্ষক ইমাউল হক সরকার টিটু ও ফ্লোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী আবাসিক শিক্ষক হারুনুর রশিদ। কমিটিকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সাংবাদিক হেনস্থার বিষয়টিও তদন্ত করা হবে।
এদিকে ছাত্রলীগের কর্মীরা জোরপূর্বক বের করে দেয়ার ২৪ ঘণ্টার পরও সেই কক্ষে উঠতে পারেননি ওই শিক্ষার্থী। এ ঘটনার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে সংশ্লিষ্ট হল প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদনও করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যা ছয়টায় হলের ৫৬২ নম্বর রুমে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
লিখিত অভিযোগে ওই শিক্ষার্থী লিখেছেন, আমি সাইফুল ইসলাম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মুহসীন হলে সংযুক্ত একজন শিক্ষার্থী। অদ্য ৫৬২নং কক্ষ বরাদ্দ পাওয়ার পর আমি কয়েকজন বন্ধুসহ কক্ষটিতে অবস্থান করছিলাম। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে আমার পরিচয় জানতে চায়।
আরো পড়ুন: ২৪ ঘণ্টা পার হলেও নিজের সিটে উঠতে পারেননি ঢাবির সাইফুল
তিনি আরও লিখেছেন, আমি বৈধ শিক্ষার্থী মর্মে হলের পরিচয়পত্র দেখালেও তারা আমাকে মারধর করে বের করে দেয়। এ সময় শরিফুল (ম্যানেজমেন্ট, ২০১৯-২০) সহ আরও কয়েকজন আমাকে মারধর করে। এসময় সাখাওয়াত অভি (সমাজকল্যান, ২০১৮-১৯), শেখ ইমরান ইসলাম ইমন, টিএইচএম, ২০১৮-১৯), মুনতাসির (ইসলামিক স্টাডিজ, ২০১৯-২০), সাখাওয়াত হোসেন শান্ত (আইইআর, ২০১৬-১৭) ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলো এবং আমাকে টানা হেঁচড়া করে কক্ষ থেকে বের করে দেয়। পরে তারা জোরপূর্বক দখল করে করতে কক্ষে অবস্থান থাকে।
বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে উল্লেখ করে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও পুনরায় ওই কক্ষ ফেরত পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ দেবার ২৪ ঘণ্টা গড়ালেও হল প্রশাসের দায়িত্বশীল কেউ যোগাযোগ করেনি বলে অভিযোগ করেছেন সাইফুল ইসলাম। ঘটনার পর ৫৬২নং কক্ষটি তালাবদ্ধ রেখেছে হল প্রশাসন। নিজ কক্ষে থাকতে না পারায় তিনি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছেন বলে জানিয়েছেন।
হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান বলেন, ঘটনার পরপরও দুই জন হাউজ টিউটর ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। আমি অভিযোগটি পেয়েছি এবং প্রক্টরকে অবহিত করেছি। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী জানান, ঘটনাটি আমি অবগত হয়েছি। বিষয়টি নিয়ে প্রভোস্ট মহোদয়ের সঙ্গে আমার একাধিকবার কথা হয়েছে। আমাদের একজন সহকারী প্রক্টরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। হল প্রশাসন এ বিষয়ে সহযোগিতা চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রক্টর অফিস সে সহায়তা দেবে।